বুটেক্স প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ঘোষিত “চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি অনলাইনে প্রচার” কর্মসূচির অংশ হিসেবে লাল রঙে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের ফেসবুক প্রোফাইল। পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থীকে চোখে ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি দিতেও দেখা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বুটেক্স শিক্ষার্থীরা নিজেদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করে ‘লাল রঙ’ বেছে নিয়েছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় সরকার ঘোষিত একদিনের রাষ্ট্রীয় শোককে প্রত্যাখানের নিদর্শন স্বরূপ লাল রঙে নিজেদের প্রোফাইল পরিবর্তন করছেন বলে জানিয়েছে তারা।
জানা গেছে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মমভাবে দমন নিপীড়ন করার প্রতিবাদে ও শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় শোককে প্রত্যাখ্যান করে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা ও ব্যাপক প্রচারণার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের একাংশ। গতকাল (২৯ জুলাই) রাতে এক বিবৃতির মাধ্যমে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ হেফাজতের বাইরে থাকা সমন্বয়করা।
শিক্ষার্থীদের গণহত্যার বিষয়ে ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ বিন কবির নির্ঝর জানান, অধিকার আদায় বলুন কিংবা রাষ্ট্র সংস্কার; ভবিষ্যত নেতৃত্ব বলুন কিংবা ইতিহাস পরিবর্তনের জন্য রাজপথ দখল- ছাত্রসমাজই পারে পুরো সিস্টেম নাড়িয়ে দিতে। আর সেই ছাত্র সমাজের প্রতি সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে গুলি চালাতে একটাবারও ভাবলেন না? প্রতিটা কান্নার ফোঁটা একত্রিত হয়ে যে বিপ্লবের জলোচ্ছ্বাস হয়ে পরিবর্তন আনবে সেই কথা কি মাথায় আসেনি? আসলেই আসেনি, আসলে দেশের ভবিষ্যতদের এভাবে রাজপথে রক্তাক্ত করা কোনো মানুষ দ্বারা সম্ভব নয়। আপনি যেই রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা দলের হোন না কেন, নৈতিকতা বিক্রি করে না দিলে এই নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর গুলি চালানোকে সমর্থন করতেন না। যেই ছাত্রসমাজ রাষ্ট্রভাষার অধিকার আদায় থেকে লড়তে শিখিয়েছে সেই ছাত্র সমাজের এক ফোঁটা রক্ত ঝরাকেও আমি নিন্দা জানাই। এজন্য আমরা লাল কাপড় পড়ে ছবি তোলা কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছি। কারণ আমি সেই শহিদ ভাইয়ের রক্ত, কাফনের কাপড় ও তাদের পরিবারের চোখের পানির সাথে বেইমানি করতে পারি না।
লাল কাপড় বাঁধার কর্মসূচি নিয়ে ৪৭ তম ব্যাচের আরেকজন শিক্ষার্থী মো. সাহরিয়ার আলম বলেন, দেশের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যার পর, রাজপথ রক্তাক্ত করার পর ও নিউজ চ্যানেল গুলো থেকে সঠিক নিউজ সম্প্রচার বন্ধ করে রাখার পর প্রহসনমূলক যে শোক দিবস পালন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আজকের নীরব প্রতিবাদ। মনে হচ্ছে সারাদেশ আজ রক্তাক্ত, মিডিয়া গুলোর মাধ্যমে আমাদের কিছু দেখতে দেওয়া হচ্ছে না এবং আমাদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না তারই প্রতীকী হিসেবে আমাদের আজকের এই কর্মসূচি।
মন্তব্য করুন