বাকৃবি প্রতিনিধি:
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী-সাংবাদিক-সাধারণ জনগণের ওপর হামলা, নির্বিচারে গুলি ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (বাকৃবিসাস)
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, কোটা আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৪জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদী, দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান এটিএম তুরাব, ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয় এবং দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার গাজীপুরের গাছা থানা প্রতিনিধি মো. শাকিল হোসেন। এছাড়া পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে ৩৫ এবং গুলি ও হামলার শিকার হয়ে ২৩০ জন গণমাধ্যমকর্মী আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৬৮ জনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ক্যাম্পাস সাংবাদিকরাও হামলা ও গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন
শনিবার (৩রা আগস্ট) বাকৃবিসাসের সভাপতি মো. রাফি উল্লাহ ফুয়াদ এবং সাধারণ সম্পাদক তানিউল করিম জীম ওই সকল অন্যায়ের প্রতিবাদে এক যৌথ বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ জানান, সংবাদকর্মী ও শিক্ষার্থীদের ওপর এই ধরনের হামলা অগ্রহণযোগ্য এবং এটি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মৌলিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এই ঘটনাগুলোতে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানান, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) গত ৩১ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিক্ষার্থী’ পরিচয় পেলেই কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাঁদের অহেতুক হয়রানি এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকার মৌলিক মানবাধিকার এর লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে ২৬৬ জন নিহত হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছে এমএসএফ। এছাড়াও এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ৭ হাজার ৭৩০ জন। এছাড়া, ৭৯৮টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ২০০ মামলায় ২ লাখ ১৩ হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে এবং ১০ হাজার ৩৭২ জনেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে এমএসএফ।
বাকুবিসাসের সদস্যবৃন্দ দাবি জানিয়ে বলেন, এ ধরনের অমানবিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াবিরোধী কার্যকলাপের সাথে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। পাশাপাশি সারাদেশে নিহত সাংবাদিকদের ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা এবং গ্রেপ্তারকৃতদের অতি দ্রুত মুক্তি দিতে হবে ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাঁদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আন্দোলন ঘিরে সকল হামলা ও আহত- নিহতের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের শান্তি প্রদানপূর্বক শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যতদ্রুত সম্ভব খুলে দিতে হবে।
ইএইচ/
মন্তব্য করুন