এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: জীবনের মৌলিক উপাদান প্রোটিন সম্পর্কিত গবেষণায় অবদানের জন্য এ বছর রসায়নে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন ডেভিড বেকার, ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম জাম্পার। বুধবার বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে তাদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস।
সুইডিশ একাডেমি জানিয়েছে- কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন ও প্রোটিনের গঠন অনুমানের জন্য এ তিন বিজ্ঞানীকে এ বছর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁদের এ কাজ দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, গঠন ইত্যাদি বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
পুরস্কারের অর্ধেক একা জিতেছেন ডেভিড বেকার। ‘কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন’ নিয়ে গবেষণার জন্য তাকে নোবেল পুরস্কারের অর্ধেক অর্থ দেওয়া হবে। বাকি অর্ধেক টাকা যৌথভাবে পাবেন ডেমিস হাসাবিস ও জন এম জাম্পারকে। তারা দুজন প্রোটিনের কাঠামোর বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার একটি মডেল আবিষ্কার করেছেন। নোবেল প্রাইজের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
ডেভিড বেকার যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের অধ্যাপক। ডেমিস হাসাবিস যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা। তিনি গুগলের ডিপমাইন্ড প্রজেক্টে কাজ করছেন এবং জন জাম্পারও হাসাবিসের মতোই গুগলের ডিপমাইন্ডের গবেষক।
ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কৃত্রিম উপায়ে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের প্রোটিন তৈরির কীর্তি গড়েছেন ডেভিড বেকার। অন্যদিকে ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার এমন একটি এআই মডেল তৈরি করেছেন যা দিয়ে যেকোনো প্রোটিনের জটিল কাঠামোর অনুমান বা ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব।
প্রতি বছরের মতো এবারও প্রথা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এবার ৭ অক্টোবর নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। চিকিৎসায় ‘মাইক্রোআরএনএ নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাবকুন নামের দুই মার্কিন বিজ্ঞানী। তাদের আবিষ্কার পৃথিবীতে মানুষের জীবন কী জটিল উপায়ে বিকশিত হয়েছে এবং কীভাবে মানবদেহ বিভিন্ন টিস্যু দিয়ে গঠিত– তার ব্যাখ্যায় সহায়তা করে। বিজয়ী এ দুই বিজ্ঞানী পুরস্কারের ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার বা ১০ লাখ ৬২ হাজার ৩৮১ ডলার ভাগ করে নেবেন।
৮ অক্টোবর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন জে হপফিল্ড ও জফ্রি ই হিন্টন। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিং সম্ভবপর করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়। তাদের গবেষণা মেশিন লার্নিং ও এআই, তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতি বছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর দিবস ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। প্রত্যেক বিভাগের বিজয়ীদের একটি স্বর্ণপদক, প্রশংসাপত্রসহ একটি ডিপ্লোমা এবং বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা দেওয়া হয়।
এসএস/
মন্তব্য করুন