এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বৃষ্টি উপেক্ষ করেই গণমিছিল করেছে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ। শুক্রবার (২ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চিকিৎসকেরা। সকালে ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেত হন মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা।
সবাবেশে বক্তারা বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমাতে সরকার নোংরা খেলায় মেতেছে। সেনা-পুলিশ-বিজিবি দিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করে এই আন্দোলন থামানো যাবে না। অন্যায়-অবিচারকে কীভাবে রুখতে হয় ছাত্রসমাজ তা দেখিয়ে দিয়েছে। এ সময় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছোঁড়ার তীব্র নিন্দা জানান
সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীতে গণমিছিল করেছে বেসরকারি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে।
শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে ব্র্যাক ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে গণমিছিল করে। শান্তিপূর্ণ এ আয়োজন থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেইলি রোডে গ্রাফিতি, দেয়াল লিখন, শহীদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন, প্রতিবাদী গানসহ ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিল শুরু হয়েছে। আজ জুমার নামাজের পর মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সরকারবিরোধী এবং ১০ দফার পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। সেখানে বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য উপস্থিত থাকলেও তাদের সহনশীল ভূমিকায় দেখা গেছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
গণমিছিলে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।
অন্যদিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগেও সর্বস্তরের মানুষের গণমিছিল চলছে। মিছিলটি জুমার নামাজ শেষে বাইতুল মোকারারম থেকে বের হয়ে শাহবাগ মোড়ে পৌঁছে। সেখান থেকে গণমিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশের বাধা দেয়। পরে তারা শাহবাগেই স্লোগান দিতে থাকে।
এদিকে আজ বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবেও কর্মসূচি পালিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এই কর্মসূচির কথা জানান এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদের।
এতে বলা হয়, আজ সারা দেশের মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া-কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র-জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের সব স্তরের নাগরিকদের এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াল লিখন, স্মৃতিচারণ ও বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে এসব কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কোথাও কোথাও শিক্ষক ও আইনজীবীরাও অংশ নেন।
এসআই/
মন্তব্য করুন