এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি অনুসন্ধানী (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) দল পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ। আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে ওই দলের। তারা জুলাই এবং চলতি মাসের শুরুতে সংঘটিত সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডে তদন্ত করবে।
তারা তদন্তের পর দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে একটি পথনির্দেশিকা দেবে বলেও জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) অন্তবর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
গোয়েন লুইস বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে আসার জন্য টিকেট করে ফেলেছেন এবং আগামী সপ্তাহে আসবেন। এই প্রতিনিধিদল প্রাথমিকভাবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংয়ের কাজটি করবে। দলটির কাজের পরিধি, টার্মস অব রেফারেন্স, কত সময় কাজ করবে; সেটি নিয়ে এখনো কাজ চলছে। কিন্তু আমরা কাজ করতে প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভ্যন্তরীণ যে তদন্ত প্রক্রিয়া (বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি) ছিল, সেটিতে জাতিসংঘের তদন্ত দলের অন্তর্ভুক্তি চেয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে ভিন্ন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ে জাতিসংঘ সেটি মেনে নেয়নি। এখন যে তদন্ত দল আসবে, সেটির নেতৃত্ব দেবে জাতিসংঘ এবং সেটি নিরপেক্ষ হবে। এর বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে এবং এটি দায়বদ্ধতার একটি পথনির্দেশিকা দেবে।’
তদন্ত দলের সমুদয় খরচ জাতিসংঘ বহন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁরা জেনেভা থেকে আসবেন। বাংলাদেশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা এক্সটার্নাল দল হিসেবে কাজ করবেন। যখন সরকারের সঙ্গে তাঁর কাজ করা কাঠামোর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে, তখন বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে এসে কাজে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করবেন।’
কারিগরি দলের টার্মস অব রেফারেন্সের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি এখনো প্রস্তুত হয়নি এবং এটি নিয়ে কাজ চলছে। এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশের সরকার কী চায় এবং কী ধরনের টেকনিক্যাল সহায়তার প্রয়োজন হবে। কাজেই জটিল কিছু বিষয় এখানে রয়েছে। এটি আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে হবে এবং এটি শিগগির হবে। তারপরে সিনিয়র যে দলটি আসবে, তারা সিদ্ধান্ত নেবে।’
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিভাগের প্রধান ভলকার তুর্ক গতকাল বুধবার গভীর রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে অভিনন্দন জানান। এ সময় তাঁরা অনুসন্ধানী দল পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়েও আলাপ করেন।
জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তার মতে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এই প্রথম জাতিসংঘ বাংলাদেশে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠাচ্ছে।
এসআই/
মন্তব্য করুন