এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এবিষয়ে ব্যাখ্যা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলতে চেয়েছে। এরই অংশ হিসেবে জামায়াতকে হঠাৎ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। তারা (বর্তমান সরকার) একটি দলের অন্যায় ন্যারেটিভের অংশ হতে পারে না।
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের পর এ বিষয়ে আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
এর আগে আজ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এ বিষয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাস-সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। সরকার বিশ্বাস করে, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর অঙ্গসংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত নয়।’ এই প্রজ্ঞাপন জারির আগে আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি মতামত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, সমাজের কিছু মহল থেকে বহু বছর ধরে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠত। এটি ঠিক-বেঠিক কি না, সেটিতে তিনি যাচ্ছেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল, এটি (জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ) কখনো করেনি। তারপর এমন একটি বিশেষ মুহূর্তে এটি করেছে, যখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও বিপ্লব চলছিল। তারা ছাত্র-জনতার এই গণ–অভ্যুত্থানকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জামায়াত-বিএনপি-জঙ্গীদের সন্ত্রাস আখ্যায়িত করে এই আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমন করার চেষ্টায় ছিল।
আওয়ামী লীগের এই প্রজ্ঞাপন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে উল্লেখে আইন উপদেষ্টা বলেন, জামায়াত-বিএনপিকে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল, ওই ন্যারেটিভের (ভাষ্য) অংশ হিসেবেই জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে হঠাৎ ঘোষণায় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলতে চেয়েছে। সেই ন্যারেটিভের অংশ আমরা (বর্তমান সরকার) হতে পারি না। আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ কোনো নীতিগত অবস্থান থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অপকৌশলের জন্য ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নির্মমভাবে দমন করার জন্য এ ইস্যুটি এভাবে ব্যবহার করেছে। আমরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরাজিত-প্রত্যাখ্যাত একটি দলের অন্যায় ন্যারেটিভের অংশ হতে পারি না।’
এসআই/
মন্তব্য করুন