পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: ছাত্ররাজনীতি মুক্ত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের( পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের সাথে গতকাল (৩ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তিন নেতার মতবিনিময় সভাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণত শিক্ষার্থীরা। তদন্ত সাপেক্ষে জরিতদের বিচারের দাবিতে আজ (৪ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণত শিক্ষার্থীরা।
মনজুরুল ইসলাম এবং মিরাজুল ইসলাম সাক্ষরিত এ স্মারকলিপিতে উপাচার্য বরাবর বলা হয়েছে, গত ১৩ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী বোর্ডের (রিজেন্ট বোর্ড) সিদ্ধান্ত ও বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১ এর ধারা ১১(১২) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকতা ও কর্মচারীদের রাজনেতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয় এবং রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, গতকাল রবিবার (৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভঙ্গ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩ জন নেতা ক্যাম্পাসে এসে প্রকাশ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় এবং দলীয় প্রচারপত্র বিলি করেন। যার ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রচার হয়েছে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ বলে আমরা মনে করি। আমরা এই কর্মসূচির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এমতাবস্থায় রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভঙ্গ করে যে সকল শিক্ষার্থীদের সহায়তা এবং যোগসাজশে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদের তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে দলীয় কর্মসূচি পালন করেছে তদন্তপূর্বক অতিদ্রুত আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ও সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে ভবিষ্যতে কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন যেন ক্যাম্পাস কোন প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে না পারেন এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জানানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্মারকলিপি হাতে পাওয়ার পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. আব্দুল আওয়াল শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে অবগত হয়েছি। আমরা চাই এই ক্যাম্পাসটা রাজনীতিমুক্ত থাকুক। এই বিষয়ে আমি এখন তোমাদের সাথে কোন কথা বলবোনা, আমি পরে তোমাদের সাথে এই বিষয়টা নিয়ে বসবো।’
উপচার্যের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের পর শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. তানভীর হায়দার এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. রাশেদুল হকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেন।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর বলেন, ‘ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও একটা রাজনৈতিক দল এখানে কর্মসূচি পালন করেছে এটা আমাদের জন্যেও উদ্বেগের। এখানে আমাদের ব্যর্থতা আছি এটা আমি স্বীকার করি। তবে আমরা যে এ বিষয়টা নিয়ে বসে আছি ব্যাপারটা এমন নয়। আমরা এরই মধ্যে এই বিষয়টা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত আমরা খোঁজা শুরু করেছি। আমরা অতিদ্রুত এই ব্যবস্থা নিতে পারবো বলে আশা করছি।’
এসএস/
মন্তব্য করুন