নিউজ ডেস্ক:
থাইল্যান্ডে ১৪ জন বন্ধুকে সায়ানাইড দিয়ে হত্যার অভিযোগে সারারাত রংসিউথাপর্ন নামের এক নারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছর ভ্রমণের সময় এক ধনী বন্ধুর খাবার ও পানীয়তে বিষ মিশিয়ে হত্যার দায়ে ৩৬ বছর বয়সি সারারাতকে দোষী সাব্যস্ত করেন ব্যাংককের একটি আদালত।
তদন্তে জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে এভাবে বিষ দিয়ে আরও বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছেন তিনি। তিনি টার্গেট করেছিলেন, এমন এক ব্যক্তি বেঁচে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, থাই গণমাধ্যমে ‘অ্যাম সায়ানাইড’ নামে পরিচিতি পাওয়া সারারাত জুয়ার নেশায় আসক্ত ছিলেন। ঋণ শোধ করতে তিনি বন্ধুদের টার্গেট করতেন। হত্যার পর বন্ধুদের গয়না ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করতেন তিনি। তাকে মনে করা হচ্ছে থাইল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক সিরিয়াল কিলারদের অন্যতম।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সারারাত তার বন্ধু সিরিপর্ন খানওয়ং-এর (৩২) সঙ্গে ব্যাংককের পশ্চিমে রাচাবুরি প্রদেশে একটি বৌদ্ধ আচার অনুষ্ঠানে অংশ নেন বলে জানায় পুলিশ।
তদন্তকারীরা বলেন, দুজনে একসঙ্গে খাবার খাওয়ার পর সিরিপর্ন অজ্ঞান হয়ে মারা যান, কিন্তু সারারাত তাকে সাহায্য করার কোনো চেষ্টা করেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, সিরিপর্নের দেহে সায়ানাইডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া তার ফোন, টাকা ও ব্যাগ ঘটনাস্থল থেকে লাপাত্তা হয়ে যায়।
সিরিপর্নের মা থংপিন কিয়াটচানাসিরি বলেন, রায় ঘোষণার সময় সারারাত হাসছিলেন। নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সারারাত।
এদিকে সারারাতের প্রাক্তন স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং তার আইনজীবীকে প্রমাণ লোপাটের দায়ে যথাক্রমে এক বছর চার মাস ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হেওচে।
সারারাতের প্রাক্তন স্বামী বিতুন রংসিউথাপর্ন গত বছর আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ জানায়, তিনি সম্ভবত সারারাতকে তার প্রাক্তন প্রেমিক সুতিসাক পুনকোয়ানকে বিষপ্রয়োগে সাহায্য করেছিলেন।
সারারাতকে সিরিপর্নের পরিবারকে ২০ লাখ বাথা (৫৭ হাজার ৬৬৭ ডলার) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, সায়ানাইড প্রয়োগ করলে শরীরের কোষ অক্সিজেন পায় না। ফলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এ বিষ প্রয়োগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট ও বমি রয়েছে।।বেশি মাত্রায় সায়ানাইড গ্রহণ করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ফুসফুসের ক্ষতি, কোমা ও মৃত্যু হতে পারে। তবে অল্প মাত্রায় গ্রহণ করলেও ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।
/ইএইচ
মন্তব্য করুন