চুয়েট সংসবাদদাতা: গত ২২ এপ্রিল (সোমবার) মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েটে) পুরকৌশল বিভাগের ৩ শিক্ষার্থী। পথে মোটরসাইকেলের সাথে একটি বাসের মুখামুখি সংঘর্ষে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান দ্বিতিয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাওফিক হোসাইন। মোটরসাইকেলে থাকা অন্য শিক্ষার্থী পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতিয় বর্ষের জাকারিয়া হিমু গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এই ঘটনার দিন থেকেই চট্টগ্রাম-কাপ্তাই হাইওয়ে সড়ক অবরোধ করে নিরাপদ সড়কসহ মোট ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় আরো দুইটি বাসকে জিম্মি করে।
পরদিন বাস মালিক সমিতির সাথে আলোচনায় বসে প্রশাসন। আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত সমূহ জানানো হয় শিক্ষার্থীদের। তবে এই সিদ্ধান্ত সন্তোষজনক না হওয়ায় আবারো আন্দোলন ও অবরোধ চালিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা।
চারদিন যাবৎ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে আন্দোলন চলে এবং এই সময়ে সড়ক অবরোধ, ভিসি ভবন ঘেরাও, একাডেমিক ভবন সমূহে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
চারদিনের এই আন্দোলন, অবরোধ এবং আলোচনার পর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরিস্থিতি সামাল দিতে ২৫ এপ্রিল বিকাল থেকে হল ভ্যাকেন্ডের (হল খালি করা) সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে আরো ক্ষুব্ধ হয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তখন তারা জিম্মিকৃত দুইটি বাসেও আগুন দেয়।
হল ভ্যাকেন্ডের সিদ্ধান্তে আরো ক্ষিপ্ত হয় শিক্ষার্থীরা। সকল শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকসমূহে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ২০ জনের প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে দাবিসমূহ পূরণে যথাযথ আশ্বাস পেয়ে রাস্তায় অবরোধ বন্ধ করে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি হল ভ্যাকেন্ডের ঘোষণা স্থগিত করে তা পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়।
গতকাল ২৭ এপ্রিল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভার একটি জরুরি সভায় পরিস্থিতি শান্ত করার উদ্দেশ্যে ৯ মে পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেয় প্রশাসন। তবে এই সময়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখা শর্তে হলে অবস্থান করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই বন্ধ মেনে নিতে পারেনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে আন্দোলনকে থামিয়ে দিতেই এই ছুটির ঘোষণা।
পরদিন ২৮ এপ্রিল ( শনিবার) নতুন কর্মসূচি প্রকাশ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি অনুযায়ী বিকাল ৪.৩০ থেকে মানববন্ধন করবে তারা এবং সর্বশেষ প্রেস ব্রিফিংয়ে পূর্বের দাবিসমূহ দ্রুত সময়ে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে নতুন আরো ৪ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এবং ১১ মে’র মধ্যে সবগুলো দাবি যথাযথভাবে পালন না করলে তার পরবর্তী সময়ে আবারো আন্দোলন জোড়ালো হবে বলে জানান তারা।
এসআই/
মন্তব্য করুন