এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: ৯ মে বৃহস্পতিবার, সকাল ১০টা। প্রশিক্ষণ উড্ডয়ন শেষে ঘাটিতে ফিরছিল বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ যুদ্ধবিমানে। হঠাৎ বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে দুই পাইলট বিমানটিকে অপেক্ষাকৃত কম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিয়ে যান। আগুন লাগার পরও বিমানবন্দরের আশপাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে বিমানটি সরিয়ে নিতে অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার পরিচয় দেন তারা। এরপরেই তারা প্যারাসুট নিয়ে বিমান থেকে নামেন।
সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানা যায়।
যুদ্ধবিমানের পাইলট ছিলেন উইং কমান্ডার সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ।
স্থানীয়দের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, শুরুতে উড়োজাহাজের পেছনের অংশে আগুন লাগে। এর পরপরই দুই বৈমানিক প্যারাশুট নিয়ে ঝাঁপ দেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে উড়োজাহাজটিতে। এরপর সেটি নদীর পানিতে পড়ে যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিমানবাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রামের বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্ঘটনার পর পাইলট উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খান ও স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন।
পরে দুই পাইলটকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়। বৈমানিকদের মধ্যে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিএনএস পতেঙ্গাতে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হলে বড় ধরনের প্রাণহানি কিংবা ক্ষয়ক্ষতির আশংকা ছিল। এ ক্ষতি এড়াতেই সম্ভবত তারা নদী বিধৌত এলাকায় যেখানে মানুষের উপস্থিতি কম সেরকম এলাকা বেছে নিয়েছিলেন।
নিহত স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মো. আমান উল্লাহ এবং মায়ের নাম নিলুফা আক্তার খানম। আসিম জাওয়াদ ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে বিএসসি (অ্যারো) পাস করেন। তিনি ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার পান এবং জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন।
আরএন/ এসআই/
মন্তব্য করুন