শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: সর্বজনীন পেনশন স্কিমসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন এই তিন দফা দাবি আদায় না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। এদিকে দ্বিতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মসূচি চালিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষদের আহ্বান জানায় শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নির্মিত সামাজিক বিজ্ঞান ভবন এর সামনে অবস্থান কর্মসুচির সময় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এই প্রত্যয় স্কিমের ফলে বেতন-বোনাস, উৎসব ভাতা কিছুই থাকবে না আর ৩০/৪০ বছর পরে যে পেনশনের সুবিধা দেখানো হচ্ছে সেটা আমরা প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা করে কোনো বীমায় রাখলেও পাব তাহলে এই প্রত্যয়স্কিমের যৌক্তিকতা কী আমরা বুঝি না। আমাদের কথা একটাই আমরা এটা মানি না, মানবো না এবং কোনভাবেই মানতে পারিনা। অবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক নীতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
দাবি আদায়ে বিগত ৯ মে হতে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনের আহ্বানে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ হতে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনের আহ্বানে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে শাবিপ্রবি শিক্ষকরা।
এই অবস্থায় শঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ১ মাস ঈদ ও গ্রীষ্মের বন্ধের পর গত ২৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা ছিল। কিন্তু সিলেটের আকষ্মিক বন্যার কারণে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই অবস্থায় শঙ্কায় দিন পার করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তারা বলছে, এরকম যদি চলতে থাকে তাহলে আমরা সেশনজটে পড়বো। যা প্রতিনিয়ত আমাদের জীবন থেকে সময় নষ্ট করছে। ইতোমধ্যে মহামারী করোনা শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে অনেক সময় নষ্ট করে দিয়েছে। এরকম চলতে থাকলে আমাদের চাকরির বয়স পার হয়ে যাবে।
একই দাবি আদায়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহ্বানে তিন দিনের অর্ধদিবস কর্মবরতি পালন করছে শাবি অফিসার্স এসোসিয়েশন। ২য় দিনের অবস্থান কর্মসূচিতে শাবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক বর্মন অসীম বলেন, আমরা চাই প্রত্যয় নামক স্কিম থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদ দেওয়া হউক। দাবি মেনে না নিলে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে আমরা আরো কঠিন কর্মসূচিতে যাব।
শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩ দিনের কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের তিনটি সংগঠন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সিদ্ধান্তেই তারা এই কর্মসুচি পালন করছেন। কর্মচারী সংগঠনের নেতারা বলেন, সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ন্তভুক্তি বাতিল চাই। দাবি মানা না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব।
এসআই/
মন্তব্য করুন