রাবি প্রতিনিধি:
গান-কবিতা-স্লোগানের মাধ্যমে কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ও ক্যাম্পাসের বাস চলাচল করার উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। এছাড়াও আগামীকাল রেললাইন অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।
রোববার (৭ জুলাই) বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে প্রতিবাদ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন রাবির ‘কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন’।
এদিন দুপুরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও মেস থেকে প্যারিস রোডে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। হল থেকে মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায়। পরে প্রতিবাদ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হয় বিকেল সাড়ে পাঁচটায়।
এসময় তারা নাটক- ‘কারার লোহকপাট’, গান- ‘ক-তে কোটা প্রথা’, তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর; কবিতা-মানুষ, ২৪ এর স্টেটমেন্ট, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটা প্রথা আছে; এছাড়াও একক অভিনয় পরিবেশন করে।
এসময় কোটা বিরোধী আন্দোলনে সমন্বয়ক আমানুল্লাহ আমান বলেন, আগামীকাল আমরা ঢাকা-রাজশাহীর যে রেললাইন রয়েছে তা অবরোধ করবো এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে। কাল থেকে ক্যাম্পাসের কোনো বাসও চলাচল করতে পারবে না।
এছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাহী বিভাগ কিভাবে পরিপত্র জারি করেছিল যা হাইকোর্টে টিকে না? তাদের ভিতরে কি সংবিধান বিশেষজ্ঞ বা আইন বোঝে এমন কেউ ছিল না? পূর্বে আমাদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার। ফলসূতিতে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিল বলে ঘোষনা দেন। এখন সেই সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে না টিকলে তার দায়ভার আপনারই।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আমরা সবার প্রধান মনে করি। তাই আমাদের দাবি আপনার কাছেই। আপনি সংসদে ঘোষণা দিলেন কোটা বাতিল হয়ে গেল। এটা নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ আদেশ ছিল। কোর্ট কেন সেটা বাতিল করলো? নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। এই দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে নির্বাহী বিভাগ। ফলে এই সমাধান নির্বাহী বিভাগকেই দিতে হবে। আদালতের রায়ের পরে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার না থাকলে, নির্বাহী বিভাগের কিন্তু পরিপত্র জারি করার ক্ষমতা রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর যে বক্তব্য দেন তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আপনি বলেছেন আমরা ক্লাস বাদ দিয়ে রাস্তায় কেন? আমরা বলতে চাই আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই। আমাদের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়া হোক। আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো।
চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকুরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে; কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাকোটায় শূন্যপদ পূরণ করতে হবে; ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সব ধরনের সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একবার কোটা ব্যবহার করতে পারবে। উল্লেখ্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে, প্রতি জনশুমারির সাথে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ইএইচ/
মন্তব্য করুন