এডুকেশন টাইমস
২৩ জুলাই ২০২৪, ১০:১৮ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

শিক্ষার্থীদের কেউ মামলায় জড়ালে দেখবে সরকার: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেউ মামলায় জড়িয়ে থাকলে, তাদের তথ্য যদি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা দেন, তাহলে তা অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে দেখবে সরকার।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।

আনিসুল হক বলেন, শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং সকল ছাত্রছাত্রীর নিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি করবে সরকার। আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় সাধারণ শিক্ষার্থী যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার দেখভাল করবে।

নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এর আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন, তখন যারা মারা গিয়েছেন তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। আমরা এখনও সেই কথার ওপরই আছি।

সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার সংক্রান্ত বহুল প্রতীক্ষিত প্রজ্ঞাপন জারির ঘোষণা দেন আইনমন্ত্রী। আপিল বিভাগের রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‌‌‌ আপিল বিভাগের রায় প্রতিপালন করেছে সরকার। রায়ের একটা দাঁড়ি, কমা, সেমিকোলন পরিবর্তন করার ক্ষমতা নেই সরকারের। তারা যেভাবে দিয়েছেন সেভাবেই আমরা করেছি।

শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে যেতে পারেন কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, মূলত এটি ছিল সংস্কার চেয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন। কোটা সংস্কার করা হয়েছে। এখন তাদের নিজ নিজ জায়গায় ফিরে গিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা উচিত।

চলমান নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত কী তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা আছে, এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। আশা করি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চলতি নিয়োগেও এই আদেশ অনুযায়ী কাজ করবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল কোটা নিয়ে সংসদে আইন পাসের–এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে অতীতেও কখনোই আইন ছিল না। পরিপত্র-প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এটি সব সময় করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পাশাপাশি নাতি-পুতিদের কোটার আওতায় ধরা হবে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, তার কোনো অংশ পরিবর্তন করার সুযোগ নেই।

নতুন করে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে কিনা, জানতে চাওয়া হলে আইনমন্ত্রী বলেন, সমস্যা কেটেছে। সমাধান করে দিয়েছি। এইটুকু আশা করতে পারি, আর সমস্যা তৈরি করা হবে না এবং পরিস্থিতির অবনতি হবে না। যদি আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর চেষ্টা কোনো অপশক্তি করে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
জেলা ও নারী কোটা বাদ গেল। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সরকার চাইলেই কোটা সংস্কার করতে পারত, কিন্তু না করার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আদালত অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে সুদূরপ্রসারী একটি কথা বলে দিয়েছে, সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যদি কোনো সময় মনে হয় এটি পরিবর্তন, বাতিল, কমানো বা শেষ করা জরুরি তাহলে তা করবে। এখনই তা কেন করা হচ্ছে না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এখন করলে আইনের শাসনের প্রতি মারাত্মক হুমকি হতো, এজন্য এটা আমরা করব না।

কারফিউ তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, জনজীবনে যখন স্বস্তি আসবে তখন কারফিউ তুলে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসছে, ফলে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ছে। সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতেও কাজ করছে। শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর নিহত শিক্ষার্থীর তালিকা

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, যারা আন্দোলন করছে তাদের মধ্যে কতজন শিক্ষার্থী ছিল, দেশের কোন কোন জায়গায় শিক্ষার্থী ছিল এবং শিক্ষার্থীদের পেছনে কারা ছিল, সেটি এ মুহূর্তে নিরূপণ করা কঠিন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরে কাজ করব এবং তার আগেই আমরা একটি মূল্যায়ন করছি। শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে আন্দোলনে। যেটা দেখা যাচ্ছে–সেখানে কিছুটা আছে তথ্য, কিছুটা অপতথ্য আবার কিছুটা গুজব। এই তথ্যের বিভ্রাট ব্যবহার করেই জনগণকে বিভ্রান্ত করতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড হচ্ছে এবং সেগুলোর যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা চলছে। ফলে এ পরিস্থিতি পরিবর্তন হওয়ার পরই আমরা নিরূপণ করতে পারব কতজন শিক্ষার্থী মারা গেছে।

আন্দোলনে জামায়াত-শিবির, জঙ্গিরা ঢুকেছে

সংবাদ সম্মেলনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আক্রমণকারী সন্ত্রাসী ঢুকেছে, আমরা এটা দেখেছি। জঙ্গি এবং জামায়াত-শিবির ঢুকেছে। তারা আক্রমণ শুরু করেছে। সরকার এবং সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো আক্রান্ত ছিল। বিটিভি, সেতুভবন, ডেটা সেন্টার, টোলপ্লাজা আক্রান্ত ছিল।

তিনি আরও বলেন, যখন আপনি আক্রান্ত হবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে প্রতিরোধ করতে হবে। যখন আমরা প্রতিরোধ করেছি, তখন সংঘর্ষ হয়েছে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কাজেই আমরা বলতে চাই, হতাহতের ঘটনার জন্য আক্রমণকারীরা দায়ী।

এসআই/

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাবিতে গনহত্যায় অর্জিত স্বাধীনতা শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী

এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ

বিশ্বের ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে বিকাশ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন পাকিস্তান সরকারের

গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন: শফিকুল আলম 

৪৬ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: প্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও সংকট

বাকৃবির ফজলুল হক হলে তিন দিনের ফিস্টে উৎসবের আমেজ

জুরাইনে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, ট্রেন চলাচল বন্ধ 

জানা গেলো পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন চলাচলের তারিখ

১০

অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২৫০০০—৩০০০০ বেতনে চাকরি আরএফএল গ্রুপে, দেবে ভ্রমণ ভাতাসহ নানান সুবিধাও

১১

নিয়োগ দিচ্ছে বিএসআরএম গ্রুপ

১২

যে কারণে ভারতে করিমগঞ্জের নাম বদলে শ্রী-ভূমি রাখা হলো

১৩

র‍্যাগিং প্রতিরোধে বেরোবিতে অভিযোগ বক্স স্থাপন

১৪

নতুন পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে আবু সাঈদ ও মুগ্ধের আত্মত্যাগের গল্প

১৫

সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ২৪ কর্মকর্তার পাসপোর্ট বাতিলের নির্দেশ

১৬

আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল কেনিয়ার

১৭

সোনালী ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তির আবেদন শুরু

১৮

১৪ বন্ধুকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগে থাই নারীর মৃত্যুদণ্ড

১৯

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া, শহীদদের রক্তের সাথে গাদ্দারি করা: হাসনাত

২০