শাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি, গণহত্যার বিচার, গোলা বারুদের অবসান, সোনার বাংলায় শান্তি এই দাবিতে র্যালি ও মানববন্ধন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নীপিড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজ।
রবিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে র্যালি নিয়ে প্রধান ফটকে গিয়ে মানববন্ধন করে শিক্ষকরা। এসময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের একদফা দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিল। তবে এই সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে হুকুম করে এদেশের ছাত্র, শিশু ও জনতার বুকের উপর গুলি চালিয়ে নির্বিচারে হত্যা করেছে।অ্যামনেস্টি ইন্টান্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই হত্যাকে গনহত্যা বলেছে এবং ক্রাইম এগেইন্সট হিউমেন্স বলে আখ্যায়িত করেছে।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের মার্কস বিহিকলস ব্যবহার করে এই হত্যাকান্ড সংগঠিত করেছে এই সরকার। আমরা রাষ্ট্রের সচেতন নাগরিক হিসেবে বসে থাকতে পারি না। শিক্ষার্থীদের এই একদফা দাবির আগে আরো অনেক দাবি ছিল । সেগুলো সরকার না মেনে হত্যাকান্ড সংগঠিত করায় ছাত্ররা একদফা দিতে বাধ্য হয়েছে। গতকাল দেশে যে গনঅভ্যুত্থান হয়েছে এর পর আর কোন অধিকার নাই এই সরকারের পদে বসে থাকার। তাই আমি বিনয়ের সাথে বলব আর কোনো গনহত্যা না করে ছাত্ররা নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্লোগান দিয়েছে তা মেনে নিয়ে আপনারা বিদায় হন।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে অধ্যাপক নজরুল বলেন, আপনারা আমাদের ভাই, আপনারা রাষ্ট্রের সন্তান।এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আপনাদের অবদান রয়েছে রয়েছে আপনারা হয়ত বলবেন আমরা উপর মহলের হুকুম মান্য করছি। আপনারা তা পালন করুন। তবে সংবিধান বিরোধী হুকুম পালন করবেন না। সংবিধান বলেছে সেই সকল হুকুম পালন করা যাবে যা অসাংবিধানিক নয়। ১৯৭১ সালে আপনারাই রাজারবাগে রাইফেল নিয়ে নেমে পরেছিলেন। আপনারা মুক্তিযুদ্ধকরেছেন। তাই আপনাদের বিনয়ের সাথে বলব আপনারা কোন দলের পক্ষ নিয়েন না। আপনারা জনগনের কাতারে আসুন। আর কোন গুলি করবেন না। আমার একটা ছাত্র ও জনগনের গায় গুলি করবেন না। যদি আর কোন গুলি করেন তাহলে আমারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও গুলির সম্মুখে যাব। আমরাও জীবন দিব।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানাতে চৌহাট্রা পয়েন্ট গেলে দুইবার পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষকরা। এতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করেন এই শিক্ষকরা।
এসময় শিক্ষকরা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে এসেছিলাম কিন্তু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বাধাঁয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে যেতে পারি নাই। তবে পুলিশ বাহিনীকে আমরা বলেছি আর কোন গুলি যেন না ছোড়ে। আমরা শিক্ষার্থীর রক্তে আর রঞ্জিত হতে চাই না। পুলিশের কাজ সকলকে নিরাপত্তা দেয়া কিন্তু এই পুলিশ বাহিনী এক পেশে ভুমিকা পালন করছে। সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে আর নিরস্ত্র ছাত্রীদেন উপর হামলা চালিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে। আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এরকম এক পেশে ভুমিকার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানাই।
এসএস/
মন্তব্য করুন