এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পতনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে ক্ষমা চেয়েছে বিবৃতি দিয়েছে পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন।
এক সংবাদ বিবৃতিতে পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা প্রথমেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল সৈনিকদের অভিনন্দন জানাই দেশ থেকে স্বৈরাচার উৎখাত করার জন্য। এই আন্দোলনে নিহত প্রতিটি ছাত্র ভাইয়ের রুহের মাগফেরাত কামনা করি, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আমরাও চাকুরী জীবনে বৈষম্যের স্বীকার। দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হয়েছে। তাই আজ কথা বলার সুযোগ পেয়ে আবারও সকল ছাত্র জনতাকে বাংলাদেশ পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে রক্তিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আন্দোলন ঘিরে শত শত পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর বিষয়ে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আপনারা জানেন সারাদেশে শত শত পুলিশ ইতোমধ্যে শাহাদাত বরন করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি এগুলো কোন ছাত্রদের কাজ নয় । নিঃসন্দেহে কোন দুষ্কৃতিকারিদের কাজ। দেশবাসী আমাদেরকে অর্থাৎ পেশাগত বাহিনী পুলিশকে তাদের শত্রু মনে করে। আমরা পুলিশ জনগণের সেবক। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ এই পুলিশ বাহিনীই করেছিলো। যে কোনো সংকটে সংগ্রামে আমরা সবসময়ই দেশবাসীর পাশে আছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্র যে আইন তৈরি করে তা বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যমে রাষ্ট্র প্রয়োগ করে থাকে। এবং আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে জনসাধারণের সাথে রোষের সৃষ্টি হয়। আমরা প্রকৃতপক্ষে নিয়োগের শুরু থেকেই সার্জেন্ট/ সাব-ইন্সপেক্টরসহ নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীরা সিনিয়র অফিসারদের অথবা রাজনৈতিক নেতাদের স্বার্থ হাসিলের বাহক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হই সেটা বৈধ হোক আর অবৈধ হোক যে কোনো আদেশই পালন করতে হয়। আমাদের অফিসাররা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দলীয় পরিচয়ে দুষ্ট। আমরা বর্তমান কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ যে কোনো আন্দোলনে কোন সাধারন মানুষকে সরাসরি গুলি করতে না চাইলেও সেটা বাধ্য হয়ে করতে হয় দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। এবং আমাদের কে দেশবাসীর কাছে ভিলেনে রূপান্তরিত করা হয়। আমরা কোটা সংস্কারের মতো পুলিশ বাহিনীর সংস্কার চাই।
ছাত্র-জনতার সাথে মিলেমিশে থাকার অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, আমরা আপনাদের সাথে মিলেমিশে থাকতে চাই, কোনোভাবেই বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কে জড়াতে চাই না। পুলিশ বাহিনী হিসেবে নিরীহ ছাত্রদের সাথে যে অন্যায় করেছে তার জন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থী। আমরা প্রতিটি পুলিশ সদস্য আপনাদেরই কারও না কারও ভাই-বোন-বন্ধু-বাবা-মা বা আত্মীয় স্বজন। আমরাও আপনাদের সমাজেরই অংশ। দেশের যে কোনো বিপদে অতীতের মতোই আপনাদের পাশে পাবেন। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান আমরা সকলে মিলে বাংলাদেশ।
পুলিশও রাষ্ট্রের সংস্কার চায় এমন দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের কোনো সদস্য কোনো অন্যায়কাজ করে থাকলে তার অবশ্যই বিচার হবে। দেশের এই সুসময়ে আমরা আমাদের কাছে থানা-ফাড়ি ও পুলিশী স্থাপনার নিরাপত্তা চাই। পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা চাই। গত ৫ আগস্ট ৪৫০ অধিক থানা আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো আপনাদেরই সম্পদ, দেশের সম্পদ। প্রতিটি পুলিশ সদস্যের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। আমরা বৈষম্যহীন পুলিশ বাহিনী চাই। পুলিশ বাহিনীর সংস্কার চাই। দেশের সবাই এই সুসময়ে একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক। ফি আমানিল্লাহ্।
এসআই/
মন্তব্য করুন