এডুকেশন টাইমস
২১ জুন ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

ঝিনাইদহে খাতা পুনঃমূল্যায়নে জিপিএ-৫ পেলেন বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী জুলিয়া

এডুকেশন টাইমস ডেস্ক:

জুলিয়া আক্তার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। এখন তার মুখে সব সময়ই লেগে থাকছে হাসি। পরিবারের সদস্যদের সাথে হাসি মুখেই কাটছে তার আনন্দময় সময়গুলো। কারন সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছে। প্রথম ফলাফলে অকৃতকার্য হলেও খাতা পুনঃমুল্যায়নে আসে তার এই সাফল্য।

জুলিয়া আক্তার (১৮) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী গ্রামের প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলামের মেয়ে। শিখা আর শিলা নামে তার আরো দুইটি বোন রয়েছে, যাদের বিয়ে হয়েছে। একমাত্র ছেলে রাতুল (১২) ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে। মাঠে ১০ শতক চাষযোগ্য জমি আছে, এই জমি আর অন্যের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চলে নজরুলের। এমনকি নজরুল ইসলামও ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। বুদ্ধিও কম। ১০ বছর বয়স হবার পর কথা বলতে পেরেছেন, তাও সব কথা ঠিকমতো বলতে পারেন না। এ জন্য স্কুলে যেতে পারেননি। যে কারনে তার পড়ালেখা হয়নি। এই অবস্থায় কৃষি কাজ করে সংসার চালান তিনি। তার পরও জুলিয়া আক্তারের পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে তিনি পড়ালেখা করাচ্ছেন।

গ্রামের স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করে জুলিয়া শহরের সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করেন। এ বছর কারিগরি বোর্ডের অধীনে জুলিয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর জানতে পারেন রসায়ন বিষয়ে ফেল হয়েছে। বাংলায়- এ, বাকি সবগুলো বিষয়ে এ+ পেয়েছে। এই ফলাফলে কান্নায় ভেঙে পড়ে জুলিয়া। পরে খাতা পুন:মূল্যায়নের পর ২৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ পায় সে। এতে মহা খুশি সকলেই।

প্রতিবেশী কাকী আলেয়া খাতুন বলেন, প্রতিটি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসলে আমরা খোঁজ নিতাম পরীক্ষা কেমন হয়েছে। কথা বলতে না পারায় মাথা ঝাকিয়ে বলে পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। প্রথমে পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর জানতে পারি আমাদের মেয়ে ফেল করেছে। এটা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না আমাদের মেয়ে ফেল করবে। কারণ আমাদের মেয়ে লেখা পড়ায় খুব ভালো। পরে সবাই সিন্ধান্ত নিলাম খাতা কল করে দেখবো কি অবস্থা। পরে ওর মা স্কুলে গিয়ে খাতা কল করে আসলে প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ পায় সে। এসে আমরা সবাই খুবই আনন্দিত।

জুলিয়ার পিতা নজরুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়েকে লেখাপড়া শিখাতে খুব কষ্ট হয়েছে। প্রতিবন্ধী মেয়ে লেখা পড়ায় খুব ভালো দেখে তখন থেকে কষ্ট হলেও লেখাপড়া করালাম।

মাতা সেলিনা বেগম বলেন, ছোট থেকে আমার মেয়ে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। ছোটবেলা থেকে লেখাপড়া সহ সব ধরনের কাজে মেয়ের খুব আগ্রহ। সব ক্লাসে ভালো ফলাফল করে। এখন এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম ফেল দেখায় পরে খাতা কল করলে এক মাস পরে প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ পায়। আমরা খুবই খুশি।

কালীগঞ্জ সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষক  আশরাফুল ইসলাম মিঠু বলেন,  শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী হয়েও অত্যন্ত মেধাবী, পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। আমরা তার মঙ্গল কামনা করছি। এবং সে বড় হয়ে একটি লেখালেখির চাকরি করতে চায়। কারন সে কথা বা শুনতে কোনটাই পারে না।

 

ইএইচ/

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাবিতে গনহত্যায় অর্জিত স্বাধীনতা শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী

এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ

বিশ্বের ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে বিকাশ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন পাকিস্তান সরকারের

গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন: শফিকুল আলম 

৪৬ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: প্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও সংকট

বাকৃবির ফজলুল হক হলে তিন দিনের ফিস্টে উৎসবের আমেজ

জুরাইনে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, ট্রেন চলাচল বন্ধ 

জানা গেলো পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন চলাচলের তারিখ

১০

অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২৫০০০—৩০০০০ বেতনে চাকরি আরএফএল গ্রুপে, দেবে ভ্রমণ ভাতাসহ নানান সুবিধাও

১১

নিয়োগ দিচ্ছে বিএসআরএম গ্রুপ

১২

যে কারণে ভারতে করিমগঞ্জের নাম বদলে শ্রী-ভূমি রাখা হলো

১৩

র‍্যাগিং প্রতিরোধে বেরোবিতে অভিযোগ বক্স স্থাপন

১৪

নতুন পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে আবু সাঈদ ও মুগ্ধের আত্মত্যাগের গল্প

১৫

সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ২৪ কর্মকর্তার পাসপোর্ট বাতিলের নির্দেশ

১৬

আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল কেনিয়ার

১৭

সোনালী ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তির আবেদন শুরু

১৮

১৪ বন্ধুকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগে থাই নারীর মৃত্যুদণ্ড

১৯

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া, শহীদদের রক্তের সাথে গাদ্দারি করা: হাসনাত

২০