এডুকেশন টাইমস
২১ আগস্ট ২০২৪, ১২:২১ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে শাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নিরাপত্তাকর্মীরা

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি:

শিক্ষার্থী ও নিরাপত্তা কর্মীকে গুলি করে হত্যা ও হাড্ডি ভেঙ্গে ফেলার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) যমুনা সেইভ গার্ড সার্ভিস লিমিটেডের নিরাপত্তা কর্মীরা।

মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সামনে থেকে শুরু হয়ে গোল চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

এসময় তারা বলেন, ১৭ আগষ্ট গভীর রাতে বাংলা বিভাগের সজীব নামের এক শিক্ষার্থী ও নিরাপত্তা কর্মী শাকিল আহমদ নোমানকে গুলি করে হত্যা করার হুমকি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার দপ্তরের সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সাইফের ভাই শাহ তাজুল ইসলাম রুমেল।

নিজেকে যুগান্তর পত্রিকার সাবেক সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এবং বর্তমানে সাইবার সিকিউরিটিতে ঢাকায় কাজ করছেন বলে পরিচয় দিয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সজীব ও সরকারি নিরাপত্তা কর্মী শাকিল আহমদ নোমানকে রাত সাড়ে তিনটার দিকে মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালাগালি, গুলি করে হত্যা ও হাড্ডি ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেন রুমেল।

হুমকিদাতা রুমেলের ভাই রেজিস্টার দপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। গুরুতর এসব অভিযোগ এনে ১৬ আগষ্ট সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিরাপত্তা কর্মী সাইফুল ইসলামকে প্রশাসনিক ভবন-১ এ ঘেরাও করে। এসময় নিরাপত্তা কর্মীদের তোপের মুখে পড়ে তিনি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করার সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সজীব ও নিরাপত্তা কর্মী শাকিল আহমদ নোমান । মূলত এই কারণেই সজীবকে গভীর রাতে রুমেল ফোন দিয়ে হুমকি ধামকি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সজীব বলেন, সিনিয়র কর্মকর্তার ভাই রুমেল আমাকে রাত সাড়ে তিনটায় ফোন দিয়ে বলেন, আমি কোনো নেতা বা সমন্বয়ক কাউকে পরওয়া করিনা। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রুমেল আমাকে হাড্ডি ভেঙে ফেলার হুমকি দেন।

অন্যদিকে নিরাপত্তা কর্মী নোমানকেও ফোন দিয়ে গুলি করে হত্যা করার হুমকি দেন রুমেল। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা কর্মী শাকিল আহমদ নোমান বলেন, সাইফুল স্যারের পদত্যাগ পত্রে সাক্ষী হিসেবে আমিও স্বাক্ষর করি। এরপর রাত তিনটা ১৮ মিনিটে সাইফুল স্যারের ভাই রুমেল আমাকে ফোন দিয়ে বলতেছেন তিনি ক্রাইম ডিভিশনে কাজ করেন এবং আমার কাছে জানতে চাচ্ছেন আমি কেন তার ভাইকে মেরেছি? কিন্তু আমি বলেছি তার ভাইকে আমি মারিনি। ফোনে রুমেল বলেন, ক্যাম্পাসে এসে দুই মিনিটে আমাকে গুলি করে হত্যা করবে এবং আমার ফ্যামিলিকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেন। এরপর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।

এই ঘটনায় দুজনই জালালাবাদ থানায় জিডি করেছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সজীব ও নোমান।

বিক্ষোভ মিছিলে চাকরিচ্যুত নিরাপত্তা কর্মী শানুর মিয়া বলেন, আমি কয়েকমাস আগে হার্টের চিকিৎসা করাতে ছুটি নিয়ে ঢাকায় যাই। চিকিৎসা শেষে ফিরে এসে দেখি আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। চাকরির জন্য অফিসে অনেকদিন দৌড়াদৌড়ি করার পর কোম্পানি ম্যানেজার হাবিব এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। অবশেষে তাদেরকে আমি ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ম্যানেজ করলেও বিগত দেড় মাসেও আমাকে চাকরি দেয়নি।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্য চয়ন দাস বলেন, আমি হাতে লাল সুতো বাঁধার কারনে সাইফুল ইসলাম স্যার আমাকে অফিসে ডেকে অনেক গালাগালি করছেন এবং আমার একদিনের ডিউটি কেটে দিয়েছেন।

নিরাপত্তা কর্মীদের অভিযোগ, সিনিয়র কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে মোটা অংকের টাকা আদায়, চাকরি থেকে হুটহাট বরখাস্ত, জোর করে বাসার কাজ করানো, শিডিউলের বাহিরে ডিউটি দেওয়া, বিভিন্ন সময় নিরাপত্তা কর্মীদেরকে হুমকিধামকি ও ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রাখতেন তিনি। তার অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো নিরাপত্তাকর্মী কথা বললে চাকরি হারাতে হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা হিসাবে কাজে যোগদান করার পরে নিরাপত্তা কর্মীদের দাঁড়ি রাখতে নিষেধ করা হলে বয়স্ক কর্মীরা বিব্রতবোধ করে প্রতিবাদও করেন তার বিরুদ্ধে।

রমজানের শুরুতে সাইফুল ইসলাম নিরাপত্তা কর্মীদেরকে ১০ হাজার টাকা দিতে বলেন নাহয় চাকরি থাকবেনা বলেও হুশিয়ারি দেন। এমনকি প্রতি মাসের বেতন থেকে আড়াই হাজার টাকা কেটে রাখা হবেও বলে জানান। এসব নিয়মের উল্টো গেলেই কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা হবে বলেও হুশিয়ারী দেন তিনি। কোম্পানির সুনাম নষ্ট হচ্ছে অভিযোগ এনে জুয়েল নামের এক নিরাপত্তা কর্মীকে মে মাসের ১৬ তারিখে চাকরিচ্যুত করেন তিনি ।

এ ব্যাপারে জুয়েল বলেন, আমি সাত বছর ধরে ক্যাম্পাসের একজন নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবা করে যাচ্ছি। আমার পরিবারে ৮ জন মানুষ আছে সবাই আমার উপর নির্ভরশীল, আমার কারনে কোম্পানির সম্মান নষ্ট হচ্ছে অভিযোগ এনে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এই ৩ মাস ধরে আমি খুবই মানসিক ভাবে কষ্টে আছি। তিনি আরও বলেন, আমাকে দিয়ে সাইফুল স্যার জমির কাজ করাতেন, বাসার কাজ করাতেন। এসব করতে অস্বীকৃতি জানালে হাজিরা কেটে দিতেন। এমনকি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বদলি করে দিতেন। তিনি আরো বলেন, ৫ দিন ওভার টাইম ডিউটি করলে প্রতিটা কর্মী সাইফুল স্যারকে ৫০০ টাকা করে দেওয়া লাগতো।

এসময় নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই রুমেলকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান নিরাপত্তাকর্মীরা।

 

/ইএইচ

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিওয়াইবি জবি শাখার নেতৃত্বে ইস্রাফিল ও লাভলু

টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশে ২য় স্থানে চবি

কুবিতে সিওইউ সাইক্লিস্টের নতুন নেতৃত্বে মামুন- রাকিন

শিক্ষা ও গবেষণায় সৌদি ফাউন্ডেশনের বৃত্তি, দেবে ৬০ লক্ষাধিক টাকা

ক্যান্টিনের খাবারের দাম এবং মান নিয়ে অস্বস্তিতে বুটেক্স শিক্ষার্থীরা

শাবিতে মাস্টারমাইন্ড ২.০ শীর্ষক ‘ন্যাশনাল কেস কম্পিটিশন’ উদ্বোধন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পাটাতনের নেতৃত্বে মাসুম-সায়েম

শাবিতে গণহত্যায় অর্জিত স্বাধীনতা শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী

এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ

বিশ্বের ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

১০

ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে বিকাশ

১১

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন পাকিস্তান সরকারের

১২

গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন: শফিকুল আলম 

১৩

৪৬ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: প্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও সংকট

১৪

বাকৃবির ফজলুল হক হলে তিন দিনের ফিস্টে উৎসবের আমেজ

১৫

জুরাইনে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, ট্রেন চলাচল বন্ধ 

১৬

জানা গেলো পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন চলাচলের তারিখ

১৭

অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২৫০০০—৩০০০০ বেতনে চাকরি আরএফএল গ্রুপে, দেবে ভ্রমণ ভাতাসহ নানান সুবিধাও

১৮

নিয়োগ দিচ্ছে বিএসআরএম গ্রুপ

১৯

যে কারণে ভারতে করিমগঞ্জের নাম বদলে শ্রী-ভূমি রাখা হলো

২০