গবি প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা দাবীর আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. নাজিম উদ্দীন আহমেদ এবং গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মাহবুব জোবায়ের সোহাগ।
শনিবার (১৮ আগস্ট) বিকালে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের তীব্র দাবীর মুখে পদত্যাগ করেন তারা। পরবর্তীতে পদত্যাগ পত্রটি সম্মুখে আসে।
শিক্ষার্থীদের দাবী সমূহ হলো:
১. বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আনদোলনে ও চিকিৎসা প্রদানে বাধা-দানকারী এবং তাদের মদদ-দাতা ট্রাস্টিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হলো এবং নতুন ট্রাস্টি বোর্ড ও পরিচালনা পরিষদ গঠন করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালনা করতে হবে।
২. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্দেশনা মোতাবেক স্থায়ী অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ নিয়োগ করতে হবে।
৩. গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ সংস্কার আন্দোলনে বাধাদান কারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি প্রদান কারী শিক্ষকদেরকে পদত্যাগ করতে হবে।
৪. একাডেমিক ভবন হতে গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন গনমুদ্রণ, হিসাব বিভাগ ইত্যাদি অপসারণ করে ১ম ফেইজ মূল একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর করতে হবে এবং ছয় মাসের মধ্যে নতুন একাডেমিক ভবন তৈরি করতে হবে।
৫.ক. ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা আধুনিক হোস্টেল নির্মান করতে হবে। হোস্টেল নির্মানের কাজ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে দৃশ্যমান করতে হবে এবং ৬ মাসের মধ্যে পূর্ণ কাজ শেষ করতে হবে।
খ. বর্তমান ছাত্রী হোস্টেলে ছাত্রী ব্যাতিত অন্য কোনো কর্মী, ডাক্তার থাকতে পারবে না এবং ছাত্রীদের হোস্টেলের নিচে ডাইনিং এর ব্যাবস্থা করে মিল সিস্টেমে মানসম্মত খাবার প্রদান করতে হবে এবং যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. প্রত্যেক বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যাপ্ত শিক্ষক আধুনিক লেকচার গ্যালারি, টিউটোরিয়াল রুম ও প্রাকটিকাল ক্লাস রুমের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. হাসপাতাল আধুনিকায়নের লক্ষ্যে হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত করতে হবে এবং ICU, NICU, CCU, CT-scan, MRI ম্যাশিনসহ আধুনিক ল্যাবরেটরি সুবিধা প্রদান করতে হবে।
৮. হাসপাতাল পরিচালনায় বিএমডিসি কর্তৃক নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যাপ্ত রেজিস্ট্রার, সি.এ. ও মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করতে হবে।
৯. ২৭তম ব্যাচের রেজিষ্ট্রেশন জনিত জটিলতা নিরসন করে, ৬ মাস বিলম্বের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরন প্রদান করতে হবে।
১০ স্থায়ী খেলার মাঠ, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা কমন রুম এবং পর্যাপ্ত ক্রীড়া সামগ্রী সরবরাহ করতে হবে।
১১. আধুনিক ক্যান্টিন নিশ্চিত করে ছাত্র বান্ধব মূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা উপাসনালয় নির্মান করতে হবে।
১৩. সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের পরবর্তীতে যেন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
পরবর্তীতে দাবীর প্রেক্ষিতে অযোগ্যতার এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতা কারণে পদত্যাগে বাধ্য হন তারা। এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত দুইজনের পদত্যাগের খবর পাওয়া গেছে।
এসময় খবর সংগ্রহে গিয়ে আন্দোলন চলাকালে মারমুখী উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের মাঝে মারধরের শিকার হন দৈনিক মানবকন্ঠের গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস অনুষদের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আখলাক ই রাসূল।
উল্লেখ্য, ডা. নাজিম উদ্দীন আহমেদ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাকালীন ট্রাস্টি ছিলেন এবং ডা. মাহবুব জোবায়ের সোহাগ চলতি মাসের ৬ তারিখ হতে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং একই সাথে তিনি উক্ত হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বরত ছিলেন। তবে হাসপাতাল থেকে অব্যবহিত দিলেও রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন তিনি।
এসএস/
মন্তব্য করুন