জাবি প্রতিনিধি: ‘ভারতের নদীর বাঁধ, বাংলাদেশের মরণ ফাঁদ’-প্রতিপাদ্যে পরিবেশ ফোরামের ব্যানারে ভারত সৃষ্ট বন্যা এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেন।
রবিবার (২৫ আগষ্ট) সকাল সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি করেন তারা। সমাবেশ শেষে তারা একটি মিছিল বের করেন এবং মিছিলটি প্রক্টর অফিসের সামনে গিয়ে শেষ করে।
এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘বন্যায় যদি মানুষ মরে সেভেন সিস্টার থাকবে নারে’, ‘আবরার তোমায় মনে পড়ে বন্যায় যখন মানুষ মরে’, ‘ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক নদীর বেশিরভাগ নদীতেই অবৈধ বাঁধ দিয়ে একদিকে যেমন গ্রীষ্মকালে পানি বন্ধ করে খরার সৃষ্টি করে অন্যদিকে বর্ষাকালে বাধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বন্যার পানিতে প্লাবিত করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ভারতীয় সকল পণ্য বয়কট করতে হবে। এখনই সময় এসেছে ভারতীয় এ সকল আগ্রাসন রুখে দেওয়ার। সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানায়।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, গত ২০ বছর ধরে রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ভারতের আগ্রাসনে ছিল। এখন যখন আমরা তরুণ্যের রক্তের বিনিময়ে, আমাদের ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে মুক্ত হয়েছি তখন ভারত আবার পানি আগ্রাসন শুরু করেছে। তবে এই পানি আগ্রাসন নতুন নয়, ১৯৭৫ সাল থেকে ভারত তাদের আগ্রাসন শুরু করেছে। আমরা এই আগ্রাসন রুখে দিতে প্রস্তুত, ভারত আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে এখন বাধ্য। ভারত সৃষ্ট এ বন্যায় সকলকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. এনামউল্যা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় আগ্রাসন বাংলাদেশকে তাদের একটি প্রদেশ রাজ্যে পরিণত করতে চেয়েছিল। এদেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার জন্য তার নানা ধরনের পাঁয়তারা করে। গত ১৫ বছর ধরে তারা রাজনৈতিকভাবে আমাদের শাসন করেছে। কিন্তু যখন তারা দেখতে পেল এ দেশের ছাত্র-জনতা, তরুণ সমাজকে কোনভাবেও দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না তখনই তারা বাংলাদেশকে ভাসিয়ে দিল পানি দিয়ে। আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে তারা আমাদের উজানের নদীগুলোতে বাঁধ দিয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে আমাদেরকে শাসন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা আমাদের দেশের সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকেও ধ্বংস করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের সকলকে একত্রিত ভাবে কাজ করতে হবে।
এসএস/
মন্তব্য করুন