এডুকেশন টাইমস
২৭ আগস্ট ২০২৪, ৫:৩৭ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

শাবিপ্রবির অস্থিতিশীল পরিবেশ নিয়ে সমন্বয়কদের সংবাদ সম্মেলন

ছবি: এডুকেশন টাইমস

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) হলের উদ্ভূত পরিস্থিতি, সমন্বয়কদের বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জায়গাগুলো পরিষ্কারকরণ এবং ক্যাম্পাসের দ্রুত প্রশাসন নিয়ে আসার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দল।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব কার্যালয়ের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরা গত সোমবার বেলা ১১টায় মিটিং করে সবাই একমত হয়েছিলাম যে, ক্যাম্পাস ও হলের নিরাপত্তায় একসঙ্গে কাজ করব। ওই সমাবেশ শেষ আমি জানতে পারি যে গেইটে স্থানীয় লোকজন আনসার বিরোধী মিছিল করছে। তখন আমরা কয়েকজন সেখানে গিয়ে তাদেরকে মিছিল শেষে চলে যেতে বলি। সেখানে আমাদের শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে রেখে বাকিরা বন্যার ফান্ড কালেকশনের জন্য শহরের দিকে যাই। এর কিছুক্ষণ পরে গেইটে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, মিছিলে থাকা স্থানীয়রা আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েছে। পাশাপাশি নয়াবাজার এলাকা থেকেও লোকজন আসা শুরু করেছে এমন পরিস্থিতিতে আমরা ফান্ড কালেকশন বাদ দিয়ে তৎক্ষণাৎ হলের দিকে আসি। হলের দুদিক দিকে লোকজন এসে ঘিরে রাখে। আমরা তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করি। তারা যখন আসছে, তারা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল। আমরা তাদেরকে স্পষ্ট করে বলি, আমাদের হলে কোনো ছাত্রলীগ নেই, যে কয়জন আছে সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী। এটা আমি বারবার করে ঘোষণা দিয়েছি। তখন এলাকাবাসী শান্তিপূর্ণভাবে হলের সামনে অবস্থান করছিল। এমন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয় যে আমাদের ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী ঢুকে হামলা করেছে। তখন এলাকাবাসী আমাদেরকে এই পোস্টগুলো দেখায়। এই পরিস্থিতি লোকজন উত্তেজিত হয়ে মারমুখো অবস্থানে চলে যায়।

তিনি আরো বলে, আমরা আসছি ছাত্রলীগ আছে কিনা এটা দেখার জন্য। ছাত্রলীগ থাকলে যেন বাহির করে দেওয়া হয়। কিন্তু অনলাইনে যখন গুজব ছড়ানোর কারণে তখন এলাকার মানুষ ক্ষেপে যায়। এমন অবস্থায় আমরা চেষ্টা করছিলাম, এলাকাবাসীকে দূরে সরিয়ে ও শান্ত রাখার, শিক্ষার্থীদের সাথে যেন এলাকাবাসীর কোনো সংঘর্ষ না হয়। এসময়ে আমরা শিক্ষক ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা আশা করছিলাম, তারা আসলে এলাকাবাসীদেরকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিব এবং হল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। তখন কিছু শিক্ষকরা আসে। সেনাবাহিনী না আসলে শিক্ষকরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসতে বলে। কিন্তু তখনো সেনাবাহিনী না আসলে,  শিক্ষার্থীদের স্বার্থে হল ছেড়ে দিতে বলে।

গতকাল বিশৃঙ্খলাকারী স্থানীয়, তারা যেকোনো দলের হোক না কেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানাব বলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন।

সমন্বয়কদের অবাঞ্ছিত করে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গালিব বলেন, দেখেন, আমাদের দায় আছে কিনা বলতে পারবো না। তবে মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু ভুল থাকতে পারে। যারা ফ্যাসিস্টের সহযোগী ছিল আজকে এসে যারা ব্যাকফুটে পড়ে গেছে তারাই গত বৃহস্পতিবার থেকেই আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যাচার করে বিবৃতি দেওয়াচ্ছে। আমরা মনে করি তারা এ ধরনের বিবৃতি সহ নানা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়ে আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হচ্ছে। আমরা আন্দোলন চলাকালীন যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি সেভাবে এখন আমাদের ইউনিটি বজায় রাখতে পারছি না। ফ্যাসিস্টের সহযোগিরাই এর পিছনে কাজ করছে। তাদের কারণেই গতকালের (২৬ আগস্ট) পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এক সাংবাদিকের প্রশ্নে সমন্বয়ক আবু সালেহ মো.নাসিম বলেন, ক্যাম্পাসে মোটর সাইকেল শোডাউন কারা দিয়েছে আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি। যখনই আমরা জানতে পারবো তারা কারা, তখনই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আমরা ক্যাম্পাসে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।

হলে উদ্ভূত ঘটনার প্রেক্ষিতে নাসিম বলেন, আমরা চাই এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসে দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হোক। প্রশাসকের নিয়োগের পর হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসবে। এতে কোনো দল, মত, গোষ্ঠী ও এলাকার প্রভাব থাকবে না। এই হল ও এই ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের ছিল, শিক্ষার্থীদের থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা এই ক্যাম্পাসকে রাজনীতিমুক্ত দেখতে চাচ্ছি। কোনো দলের প্রভাব দেখতে চাই না। আমরা সকল শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আগামীর ক্যাম্পাস সাজাতে চাই।

এসময় সমন্বয়ক দলের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন দেলোয়ার হোসেন শিশির, মো. জহিরুল ইসলাম, হাফিজুল ইসলাম ও আজাদ শিকদার। এছাড়াও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার এলাকার স্থানীয় লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের হলগুলোতে ছাত্রলীগ ঘাপটি মেরে বসে আছে এই অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই দিক দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা জানায়, শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে চলে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে হলে শিক্ষার্থীদের তুলবে। এরপর তোপের মুখে ছেলেদের হলের শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করেন।

এসআই/

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পুতিনের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুঁশিয়ারি  

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তীব্র প্রতিরোধে শেখ হাসিনার বিদায় ত্বরান্বিত হয়: প্রেস সচিব

সিওয়াইবি জবি শাখার নেতৃত্বে ইস্রাফিল ও লাভলু

টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশে ২য় স্থানে চবি

কুবিতে সিওইউ সাইক্লিস্টের নতুন নেতৃত্বে মামুন- রাকিন

শিক্ষা ও গবেষণায় সৌদি ফাউন্ডেশনের বৃত্তি, দেবে ৬০ লক্ষাধিক টাকা

ক্যান্টিনের খাবারের দাম এবং মান নিয়ে অস্বস্তিতে বুটেক্স শিক্ষার্থীরা

শাবিতে মাস্টারমাইন্ড ২.০ শীর্ষক ‘ন্যাশনাল কেস কম্পিটিশন’ উদ্বোধন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পাটাতনের নেতৃত্বে মাসুম-সায়েম

শাবিতে গণহত্যায় অর্জিত স্বাধীনতা শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী

১০

এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ

১১

বিশ্বের ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

১২

ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে বিকাশ

১৩

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন পাকিস্তান সরকারের

১৪

গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন: শফিকুল আলম 

১৫

৪৬ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: প্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও সংকট

১৬

বাকৃবির ফজলুল হক হলে তিন দিনের ফিস্টে উৎসবের আমেজ

১৭

জুরাইনে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, ট্রেন চলাচল বন্ধ 

১৮

জানা গেলো পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন চলাচলের তারিখ

১৯

অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২৫০০০—৩০০০০ বেতনে চাকরি আরএফএল গ্রুপে, দেবে ভ্রমণ ভাতাসহ নানান সুবিধাও

২০