রাবি প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার কারণে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে পৃথকভাবে হামলার শিকার হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে নিজ নিজ এলাকায় এ হামলার শিকার হন তারা।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান ও ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী অনিক আহমেদ। জাহিদের বাসা নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বগারবাড়ি বাজারে। তার পিতার নাম মো. আব্দুল জলিল। অনিকের বাসা সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে।
হামলার বিষয়ে অনিক আহমেদ জানান, ছাত্র জনতার যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমি আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হই। ফলে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চোখে পড়ে যাই। গত ২৫ আগস্ট আনুমানিক রাত ১০টায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমাদের এলাকার ও বহিরাগত কয়েকজন আমার গতিরোধ করে। তাদের মধ্যে একজন বলছিল, ‘এটাই মমিন (অনিকের ডাকনাম), এটাই মমিন। ওকে মারো, ওকে মারো।’ তখন তারা প্রথমে আমাকে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। অপরিচিতদের মধ্যে একজনের হাতে ছিল চাইনিজ কুড়াল। ওটা দিয়ে আমাকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথার বামপাশে কোপ মারে। তখন আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরে রানা নামের একজন পথচারী আমাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমার মাথায় ৬টা সেলাই দিতে হয়েছে। হামলাকারী সবাই আমাদের ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আমি দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
হামলার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তারা আমাকে ভয়ভীতি দেখাতো। পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতো। আমি তাদের কথা না শোনায় তারা পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
অন্যদিকে হামলার বিষয়ে জাহিদ হাসান বলেন, আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রথম থেকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। নতুনভাবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের এলাকার ভূমি অফিসের লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি অনিয়ম ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলি এবং হাটের সিন্ডিকেট ভেঙে দেই। যারা দালালি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতো তাদের সেই ইনকামের পথ আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হই। ফলে আমি এই দুর্নীতিবাজদের চক্ষুশূল হয়ে পড়ি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন আমাকে মারার পরিকল্পনা করে।
‘গত ২৫ তারিখে আমাদের দোকানে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরমান, সবুজ হোসেন ও আবু-সহ আরো কয়েকজন রড নিয়ে আমার মাথা, বুক ও পায়ে আঘাত করে। জোরে গলা টিপ ধরে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সামান্যর জন্য মহান আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। গলায় প্রচুর ব্যথা, পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। আমার ভাই, আমাকে রানীনগর হাসপাতাল ভর্তি করেন। ডাক্তার বলেছেন, সিটিস্ক্যান করতে হবে।’ জাহিদ আরো যোগ করেন।
হামলার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ঐ লক্ষ লক্ষ টাকার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য তারা সবাই টাকার বিনিময়ে আমাকে হত্যার এই জঘন্য গেম খেলেছে। যেটা আমি কল্পনাও করিনি।
এসএস/
মন্তব্য করুন