কুবি প্রতিনিধি: মাঝরাস্তায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গাড়ি। গাড়ি সচল করতে গাড়ি ধাক্কা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লাল বাসে চলাচলকারী শিক্ষার্থীদের জন্য এটা নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরেই ভাড়ায় চালিত লাল বাসগুলোতে এমন যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কোটবাড়ির টেকনিক্যাল ট্রেইনিং সেন্টারের সামনে এমন ঘটনা ঘটে।
পরিবহন পুলের তথ্যমতে, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের কাজে মোট ১৪ টি বাসের মধ্যে ৬ টি নীলবাস এবং ৮টি লালবাস রয়েছে কুবিতে। এছাড়াও আরো দুইটি নীল বাস চালক না থাকায় একই সময়ে সার্ভিস দিতে পারছে না।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এর আগেও লাল বাসের জানালায় সমস্যা, ছাদের সমস্যার কারনে বৃষ্টিতে পানি ঢুকে যায় বাসগুলোতে৷ বাসগুলোর পাখা নষ্ট থাকায় গরমের সময় ভোগান্তিতে পড়ছে বলে জানান। এছাড়া মাঝরাস্তায় ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে বিভিন্নসময় ক্লাস-পরীক্ষায় সময়মতো আসতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।
আকরাম মিয়া নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘কিছু বাসে মাঝেমধ্যে বৃষ্টির সময় পানি ঢুকে আর ফ্যানগুলোও ঠিকমতো চলেনা৷ বাসভর্তি শিক্ষার্থীদের জন্য এটা ভোগান্তির৷ এটা আরও বাড়ে যদি মাঝ রাস্তায় বাস বন্ধ হয়ে যায়৷ ভাড়া যেহেতু দিচ্ছেই, ভালো মানের বাসই আনুক।’
লাল বাসের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবহন পুল, কুবির সেকশন অফিসার মো. জাহিদুল আলম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অনাকাঙ্ক্ষিত যে ঘটনা ঘটেছে তা পুরোপুরি বাসের সাময়িক যান্ত্রিক ত্রুটি৷ বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে, পরে অবশ্য ২০ মিনিটের মধ্যে তা ঠিকও হয়ে যায়৷ যদিও এজন্য শিক্ষার্থীদের ভুগতে হয়েছে। এ ভোগান্তি কমাতেই আমরা প্রতিনিয়ত ডিপোর সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করে যাচ্ছি।’
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা বিআরটিসির ডিপোর ম্যানেজার আবদুল কাদের জিলানী জানান, ‘গাড়িগুলো তো ২০১১ সাল থেকে চলছে। সার্ভিসের কোনো কাজ আমি বাকী রাখি না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখনই বাসের সমস্যার কথা জানিয়েছে আমরা দ্রুত সমাধান করে দিয়েছি। আমাদের বাজেট অনুযায়ী আমরা গাড়িগুলো মেরামত করে থাকি। যখনই বাস গুলোর সমস্যা হয় আমরা সাথে সাথে সমাধান করে থাকি। বাসগুলো যেহেতু একদিনেই তিন-চার বার তার চেয়েও বেশি রাউন্ড দেয়, ফলে মাঝেমধ্যে যান্ত্রিক সমস্যায় পড়তে হয়।’
লাল বাসগুলোতেই সমস্যা বেশি কেন- প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল আলম বলেন, ‘ আমাদের নীল বাসের ক্ষেত্রে আমরা প্রতিনিয়ত চেক করেই মেরামতে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু ডিপোর বাসগুলোর রক্ষনাবেক্ষনের বিষয়টা তো তাদের নিজস্ব বিষয়৷ বাস নষ্ট হলে বা সমস্যা থাকলে তাদের থেকে এক্সট্রা বাস দিয়েই আমাদের সার্ভিস দিতে হবে, এমন কথাও আছে। তারপরও আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি লাল বাসগুলোর মান বাড়ানোর। আমার মনে হয় তা আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে, তবে আমরা ক্রমান্বয়ে আরো উন্নত করার চেষ্টা করছি।’
লাল বাসের এ সমস্যার বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। পাশাপাশি বিআরটিসির সাথে কথা বলে আরও ভালো মানের বাসের ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেই উদ্যোগও নিবো।’
এসএস/
মন্তব্য করুন