পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের এক শিক্ষককে বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার বিশ্বাস। ছাত্রী মুসলিম এবং শিক্ষক সনাতন ধর্মের হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২২ সেপ্টেম্বর সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অভিযোগের ভিত্তিতে ২৩ সেপ্টেম্বর একাডেমিক সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি অনৈতিক সম্পর্কে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পেয়ে গতকাল (৮ অক্টোবর) তদন্ত রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের নিকট জমা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুব্রত কুমার বিশ্বাসের। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। কিন্তু শিক্ষক সম্পর্ক পরবর্তী সময়ে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে বিয়ের দাবিতে বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দেন ওই ভুক্তভোগী ছাত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান খাদিজাতুল কুবরা বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এজন্য ওই ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষাসহ একাডেমিক সকল কার্যক্রম থেকে ওই শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছি এবং এ বিষয়ে স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে আমার বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর একটি তদন্ত রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিষয়টি আসলে লজ্জাজনক। এমন শিক্ষককে ক্লাসে দেখলে বিব্রত লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শিক্ষককে নিয়ে যদি নৈতিকতার প্রশ্ন ওঠে তাহলে খুবই আত্মসম্মানে লাগে। এই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দিতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার হোয়াটসঅ্যাপে নক দিয়েও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ওই বিভাগের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌননিপীড়ন বিরোধী একটি পূর্ণাঙ্গ সেল রয়েছে। আমি তাদেরকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি, যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই এটার উপযুক্ত বিচার হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি নতুন, বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো করে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
এসআই/
মন্তব্য করুন