জাবি প্রতিনিধি: সাভারে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ জেনিচের সঞ্চালনায় শ্রমিক হত্যার বিচার ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।
সজীব আহমেদ বলেন, এই রাষ্ট্রের ব্যায়ভার চলছে কাওসার আর চম্পাদের মতো নিরীহ শ্রমিকদের টাকায়। অথচ সরকারের পুলিশ বাহিনী যে অস্ত্র দিয়ে তাদের বুকে গুলি চালিয়েছে, সেই অস্ত্র- গুলি শ্রমিকের টাকায় কেনা। আমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ও চলে শ্রমিকের টাকায় চলে, আমার শিক্ষকের বেতন হয় শ্রমিকের টাকায়। দেশের একজন নাগরিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এই শ্রমিকদের কাছে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা শ্রমিকের পাশে দাঁড়িয়েছি। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। এই দায় অন্তর্বর্তী উপদেষ্টা সরকারকে নিতে হবে’।
তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে তাদের সকল দাবিসমূহ মেনে নিতে হবে। তাদের বেতন-বোনাসের বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। একইসাথে তাদের আবাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং ন্যায্য বেতন কাঠামো কার্যকর করতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, জুলাইয়ের যে গণঅভ্যুত্থান সেইটা শুধুমাত্র ছাত্রদের ঘটানো অভ্যুত্থান না। উদ্ভুত পরিস্থিতিকে শ্রমিকদের দাবিদাওয়াকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে এই সরকার। আমরা দেখলাম, এই আন্দোলনকে প্রতিবিপ্লবের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন তাদের মধ্যে অনেকেই। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন- আন্দোলন চলাকালে গুলি কেন চালাইতে হবে যৌথ বাহিনীকে দিয়ে! যদি কাজের বিনিময়ে বেতন চাওয়া যদি এই সরকারের কাছে অপরাধ হয়, তাহলে বলবো গণঅভ্যুত্থান আবারো বেহাত হয়ে যাচ্ছে। এই আশুলিয়া অঞ্চলেই প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক শহীদ হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে। কিন্তু সরকার তাদের প্রতিদান ভুলে যেতে বসছে দুই আড়াই মাস যেতে না যেতেই। আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, শ্রমিকদের রক্ত মাড়িয়ে, তাদের দায়িত্ব না নিয়ে বসে থাকলে তার সমুচিত জবাব দেয়া হবে এই সরকারকে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর সাভারের আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় জেনারেশন নেক্স টু ফ্যাশন লিমিটেডের চার মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত অবস্থায় পুলিশের শটগানে গুলিবিদ্ধ হন চম্পা খাতুন। গতকাল রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান তিনি। এছাড়া, গত ৩০ সেপ্টেম্বর আশুলিয়ায় শ্রমিকের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে কাউসার নামের আরেক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত পাঁচজন আহত হন।
এসএস/
মন্তব্য করুন