জাককানইবি প্রতিনিধি: লক্ষ্য অটুট! স্বাবলম্বী হয়ে মা বাবার পাশে দাড়াতে হবে। তাইতো স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে জীবনের সব বাধা, বিপত্তি সমালোচনায় সীমাবদ্ধ না থেকে লড়ে গেছেন দীর্ঘ সময় পেয়েছেন সফলতাও। নিজের প্রতি অবাধ বিশ্বাস আর পরিবারের সহায়তায় সফলতা হিসেবে অর্জন করেছেন এসএসসি, এইচএসসি তে জিপিএ ৫.০০ এবং সর্বশেষ গুচ্ছ ভুক্ত-২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ভর্তির সুযোগ। বলছি টাঙ্গাইল থেকে ছুটে আসা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তীর্থ দাসের জীবনের গল্প।
পরিবারে মা-বাবা আর এক বোন নিয়ে গঠিত পরিবারের বড় সন্তান তীর্থ দাস। বাবা গ্রামের বাজেরের একজন স্টেশনারি দোকানদার। আর পাঁচজন শিশুর মতো ছোটতে সুস্থ থাকলেও চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ালেখার সময় ডিএমডি নামক এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে হারিয়ে ফেলেন নিজের চলাফেরার শারীরিক শক্তি টুকু। দেশ এবং দেশের বাইরে চিকিৎসার পর দীর্ঘদিন বেল্ট এর সহযোগীতায় চলাফেরা করতে পারলেও করোনা মহামারীর সময় অসুস্থতা বেড়ে যায়। এসময় লক-ডাউনের মাঝে দেশের বাইরে না নিয়ে যেতে পারার কারনে আরও অসুস্থতা বেড়ে গেলে হারিয়ে ফেলেন চলাফেরার শেষ সামর্থ্যটুকুও।
এতোকিছুর পরেও দমে যায়নি তীর্থ। নিজের প্রবাল আগ্রহে চালিয়ে গিয়েছে পড়ালেখা। সর্বশেষ ভর্তি যুদ্ধের মাধ্যমে জায়গা করে নেয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগে।
তার এ দীর্ঘ পথচলার বিষয়ে তীর্থ’র কাছে জানতে চাওয়া হলে বলেন, শারীরিক সমস্যার কারনে অন্য সব বন্ধুদের মতো পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় সবাই যেখানে বিভিন্ন কোচিং বা প্রাইভেটে পড়েছে সেখানে আমি ঘরে বসে অনলাইনে বিভিন্ন ক্লাস করেছি। পাশাপাশি বাবা, মা, বন্ধু-বান্ধব সবাই আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে।
তীর্থ’র এ সফলতার গল্প শোনালেন তার মা এবং দাদু। ছেলেকে পড়াশোনা এবং চিকিৎসা করাতে গিয়ে শুনতে হয়েছে নানা জনের নানান কথা। কথাগুলো বলতে গিয়ে তীর্থ’র মা এবং দাদু উভয়েরই কান্নায় চোখ বেয়ে গড়িয়ে আসে পানি। এরপর আর বেশি কিছু বলতে পারলেন না তারা। বর্তমানে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে পড়াশোনার খরচ চালানোয় হিমসিম খেতে হচ্ছে পরিবারটিকে।
তীর্থ’র বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয় সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ সুজন আলীর সাথে। আগামীতে তীর্থ’র পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সকল প্রকারের আর্থিক এবং লজিক্যাল সহযোগীতার আশ্বাস দেন তিনি । তিনি আরও বলেন, সে হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে না পারায় নিচ তলায় তাদের ১৮ ব্যাচের সকল ক্লাস নেওয়া হচ্ছে এবং ল্যাব রুমটি দ্বিতীয় তলায় হওয়ায় তার একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে তাকে সহায়তায় জন্য বিভাগের সকল শিক্ষক,শিক্ষার্থী এবং কর্মচারিদেরও বলা হয়েছে।
এসএস/
মন্তব্য করুন