ইবি প্রতিনিধি: বার কাউন্সিল পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো করে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ. এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেছেন, বার কাউন্সিলের একজন সদস্য হওয়ায় আমি দেখি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অনেক ভালো করে। এই ভালো করার পিছনে আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবদান অনেক বেশি। আরও ভালো করতে ছাত্রদের কোর্টগুলোতে পাঠাবেন যাতে তারা হাতে কলমে শিক্ষা নিতে পারে। কোর্টগুলোতে কিভাবে মামলা পরিচালিত হয় যা তারা শিখে পরবর্তীতে কাজে লাগাতে পারবে।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে কর্মকর্তা সমিতির আয়োজিত গুনীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের এই দেশ স্বাধীন হওয়ার ফলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।। এক সময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ। আজকে বাংলাদেশকে উচ্চ আসনে নিয়ে গেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের নাম ছিল কানুনে শরীয়াহ। এই নাম থাকার ফলে আপনারা বিজেএসে এ অংশ গ্রহণ করতে পারতেন না। তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি শাহজাহান আলম সাজুর নেতৃত্বে আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে কর্তৃপক্ষ ‘ল’ ডিপার্টমেন্ট করতে বাধ্য হয়েছিলো ।
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক শিক্ষার্থী এ্যাড. শাহ্ মনজুরুল হক ও এ্যাড.মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনছারী সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন । তাদেরকে সংবর্ধনা প্রদান করার জন্য গুনীজন সংবর্ধনা আয়োজন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি।
ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি দেওয়ান টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে ও সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ. এম আমিন উদ্দিন। এ সময় সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন সুপ্রীম কোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শাহ মনজুরুল হক ও কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নূরুল হুদা আনছারী।
এ ছাড়া সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যক্ষ ড. শাহজাহান আলম শাজু। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ্যাড. কে এম মাসুদ রুমী ও এ্যাড. বি এম আব্দুর রওফেল। অনুষ্ঠানে স্বারক বক্তব্য প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এ.টি.এম এমদাদুল আলম।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ড.শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.বাকী বিল্লাহসহ অন্যান্য শিক্ষক, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমরা সকলেই জানি পৃথিবীতে মানুষ হেরে দুঃখ পায় আর জিতে আনন্দ পায়। কিন্তু এমনটি দুইটি জায়গা আছে যেখানে হেরে আনন্দ পাওয়া যায়। সেটা হলো ছাত্রের কাছে শিক্ষকের এবং পুত্রের কাছে পিতার হেরে যাওয়া। আজ আমি আনন্দিত যে আমাদের ছাত্রদের সাফল্য আমাদের ছাড়িয়ে গেছে। আজকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যে ছাত্রদের নিয়ে এ ধরনের সভার আয়োজন করলাম তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডী পেরিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ধ্রুবতারার মতো প্রজ্জ্বলিত। যাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে তারা আরও এগিয়ে যাক আমাদের এই প্রত্যাশা। এত কিছুর ভেতরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের এই আগমন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে আলোকিত করে তুলেছে। আমরা সত্যিই আজকে আলোকিত।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব মুর্যালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অতিথিরা। পরে তারা প্রশাসন ভবনের সামনে বৃক্ষরোপণ করেন।
এসআই/
মন্তব্য করুন