ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ ড. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক মুক্ত জ্ঞান চর্চার তীর্থ ভূমি। ইবির শিক্ষার্থীরা প্রতিটি অঙ্গনে দেশ ও দেশের বাহিরে সফলতার সাথে কাজ করছে। আইন অঙ্গনে একজন মনজুরুল ইসলাম আছে। প্রতিটি জায়গায় আমাদের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিক সেই প্রত্যাশা করি।’
শনিবার (১৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের অনেক পরিশ্রম আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভালো খবর শুনি তখন অন্তরে শান্তি লাগে। আবারও যখন খারাপ খবর শুনি তখন আবারও অন্তরে রক্ত ক্ষরণ হয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজীপুরে থাকতে বহিষ্কার হয়েছিলাম পরে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হয়ে এসেছি। আমার জীবনে এত কষ্টের সার্টিফিকেট নিতে কালো গাউন পরার স্বপ্ন আজও বাস্তবায়িত হয়নি। তবে দেশের বাহিরে অনেক প্রতিষ্ঠানে হয়েছে।
তিনি বলেন, ইবি প্রতিষ্ঠাকালীন শাখা ছাত্রলীগের একটা বিরল ঘটনা আছে। বঙ্গবন্ধুর পল্লী বানানোর জন্য ছাত্রলীগ কোচিং সেন্টার টাকা জমিয়ে বঙ্গবন্ধুর নামে জমি রেজিস্ট্রি করে। ঐ জমিটি এখনও বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট নামে আছে। বাংলাদেশের ছাত্রলীগের ইতিহাসে এট নজির।
এদিন ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি দেওয়ান টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে ও সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল এ. এম আমিন উদ্দিন। এ সময় সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে ছিলেন সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শাহ মনজুরুল হক ও কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নূরুল হুদা আনছারী।
এ ছাড়া সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যক্ষ ড. শাহজাহান আলম শাজু। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ্যাড. কে এম মাসুদ রুমী ও এ্যাড. বি এম আব্দুর রওফেল। অনুষ্ঠানে স্বারক বক্তব্য প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) এ.টি.এম এমদাদুল আলম।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ড.শাহাদৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.বাকী বিল্লাহসহ অন্যান্য শিক্ষক, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড.শেখ আবদুস সালাম বলেন,আমরা সকলেই জানি পৃথিবীতে মানুষ হেরে দুঃখ পায় আর জিতে আনন্দ পায়। কিন্তু এমনটি দুইটি জায়গা আছে যেখানে হেরে আনন্দ পাওয়া যায়। সেটা হলো ছাত্রের কাছে শিক্ষকের এবং পুত্রের কাছে পিতার হেরে যাওয়া। আজ আমি আনন্দিত যে আমাদের ছাত্রদের সাফল্য আমাদের ছাড়িয়ে গেছে।
প্রধান অতিথি এ্যাটর্নি জেনারেল এ. এম আমিন উদ্দিন বলেন, আমাদের এই দেশ স্বাধীন হওয়ার ফলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিস্ঠিত হয়েছে।। একসময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ। আজকে বাংলাদেশকে উচ্চ আসনে নিয়ে গেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের নাম ছিল কানুনে শরীয়াহ। এই নাম থাকার ফলে আপনারা বিজেএসে এ অংশ গ্রহণ করতে পারতেন না। তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি শাহজাহান আলম সাজুর নেতৃত্বে আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে কর্তৃপক্ষ ‘ল’ ডিপার্টমেন্ট করতে বাধ্য হয়েছিলো ।
এর আগে, বেলা সোয়া ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব মুর্যালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অতিথিরা। পরে তারা প্রশাসন ভবনের সামনে বৃক্ষরোপণ করেন।
আরএন/
মন্তব্য করুন