নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও শারীরিক-মানসিক হেনস্তার প্রতিবাদে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।
রোববার (১০ মার্চ) সকাল থেকেই আন্দোলনে মুখর ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন। তবে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ও অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকদের ‘সম্মান হত্যা’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিভাগটির শিক্ষকরা।
এ দিন সকাল ১১টায় মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহা ও বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করেন। এ সময় তারা আবারও প্রশাসনিক ভবনে তালা মারেন। ‘শিক্ষক না ধর্ষক’, ‘সাজন শুভ্রের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। শেষে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকায় জুতার মালা পড়িয়ে তা দাহ করেন তারা। এ সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত হন।
এরপর দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়ধ্বনি মঞ্চের সামনে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সকল সংগঠনের কর্মীরা। এরপর সেখানে বক্তব্য প্রদান করে একটি মৌন মিছিল বের হয়। মৌন মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একপর্যায়ে শেষ হয়।
তবে দুপুর ২টায় তালাবদ্ধ বিভাগের সামনে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকরা। তারা দাবি করেন, ‘যদি ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করা হয়, আমরা তার বিচার চাই।’
সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল আমিন বলেন, ‘তবে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভাগের ‘সম্মানিত’ শিক্ষকদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে যাতে করে বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষক এবং বিভাগের সম্মান নষ্ট হয়েছে।’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের ১২ জন শিক্ষক। এ সময় আরো বক্তব্য দেন সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান খান।
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনগুলো করাচ্ছে ভেস্টেড (অর্পিত) কোনও গ্রুপ। তারা তাদের অসদুদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে।’
তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতিবাদে শিক্ষকদের এই মানববন্ধনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যেতেই শিক্ষার্থীরা এর তুমুল সমালোচনা করছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ মার্চ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়া একই বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রের বিরুদ্ধে মদদ দেয়ার অভিযোগ এনে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করেন। বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ একাধিকবার তালা দেয়া হয় প্রশাসনিক ভবনে,ওই বিভাগটিও তালাবদ্ধ করা হয় এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হয়। এরপর গত ৬ মার্চ তিন সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এসআই/
মন্তব্য করুন