শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা শাহপরান ও বঙ্গবন্ধু ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে ছাত্রলীগের দখলে থাকা কক্ষগুলোতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পিস্তল, শটগান, দেশীয় অস্ত্র ও বিপুল পরিমান মদের বোতল উদ্ধার করেছেন। এসময় শিক্ষার্থীরা হলের প্রভোস্টদের কাছ থেকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত এই মর্মে স্বাক্ষর নেন। এসময় হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিবে এই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন প্রভোস্টবৃন্দ।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই অভিযান চালান শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, অস্ত্র উদ্ধার করা হলগুলো ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ছিল। এসময় শাহপরাণ হলের ২০৮, ২০৯, ২১০, ২১১, ২১৫, ৪২৩, ৪২৪, ৪২৭, ৪২৯ নং কক্ষের তালা ভাঙ্গা হয়। পরে এসব রুমের মধ্যে সি ব্লকের ৪২৩ নং রুম থেকে শটগান ও পিস্তল, ৪২৪ নং রুম থেকে শতাধিক মদেও খালি বোতল এবং জিআই পাইপ, ৪২৭ নং কক্ষ থেকে ১০টি রামদা, বিপুল পরিমাণ রড-জিআই পাইপ, দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র উদ্ধার করেন শিক্ষার্থীরা। এতে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি খলিলুর রহমান (২০৯ নং), সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানের (৪২৯ নং) কক্ষের তালা ভেঙ্গে রুম তল্লাশি করা হয়। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২০২০ নং কক্ষে ৪টি বিদেশী ব্রান্ডের মদের বোতল পাওয়া যায়।
অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত পিস্তল, শটগান, দেশীয় অস্ত্র ও মদের বোতল এগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বৈষম্যবিরুধী ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব।
এসময় শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, আমরা আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ অভিযান পরিচালনা করেছি। আজ থেকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস ছাত্ররাজনীতিমুক্ত, এখন থেকে এখানে কোন ধরণের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি চলবে না। এছাড়া সরকারকে দ্রুত কোটা সংস্কার করে সারাদেশে নিহত শিক্ষার্থীদের শহীদি মর্যাদা দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি কৌশিক সাহা। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সবধরনের ব্যবস্থা নিব। পাশাপাশি হলে যেসব অস্ত্রসস্ত্র পাওয়া গেছে তা খতিয়ে দেখে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আমরা ব্যবস্থা নিব।
অভিযানের সময় শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে ৬ দপা দাবি সংবলিত প্যাডে স্বাক্ষর করেন তিনটি হলের প্রভোস্ট বডির সদস্যরা।
এরআগে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে নিহত শিক্ষার্থীদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে দুপুর ২টা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এককিলো ও গোলচত্বর সংলগ্ন রাস্তায় জানাযার নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের সকল এলাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের দখলে ছিল।
এসআই/
মন্তব্য করুন