জাবি প্রতিনিধি: গত ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের নিচে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ নির্বিচারে ছোররা গুলি চালাচ্ছিল। আর তখন ভবনের অভ্যন্তরে ভিসি ও অন্যান্য শিক্ষকরা মোরগ পোলাও খাচ্ছিলেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিশমাইলের ‘হাজি বিরিয়ানি হাউজ’ থেকে ৭০ প্যাকেট মোরগ পোলাও আনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাইক্রোবাসে করে এই খাবার আনা হয়। যার ড্রাইভার ছিলেন উজ্জল। উপাচার্যের সচিব গৌতম কুমার বিশ্বাস ড্রাইভার উজ্জলকে খাবার আনার দায়িত্ব দেন।
খাবার রেজিস্ট্রার ভবনে ঢোকার একটি ভিডিও প্রতিনিধির কাছে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট বিরিয়ারির প্যাকেট গাড়ি থেকে নামিয়ে নতুন রেজিস্ট্রারে ঢোকানো হচ্ছে। সেখানে নিরাপত্তা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেফরুল হাসান চৌধুরী ও মো. আবু সাইদ জিন্নাহ উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেফরুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা খাবার আনার দায়িত্বে ছিলাম না । আমরা চৌরাঙ্গী থেকে ঐ গাড়িতে উঠি। ওই গাড়িতে বিরিয়ারি ছিলো এটা সত্য।
একাধিক শিক্ষক ভিসি নুরুল আলমের খাবার খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান , ভিসি নুরুল আলম স্যারের অনেক বয়স হয়েছে। সকাল থেকে কিছু খায়নি এবং অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষকরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলো। তাই ভিসি স্যার সহ অন্যান্য শিক্ষকরা মোরগ পোলাও খান। খাবার খাওয়ার শেষে পুলিশের নির্দেশে দ্রুত সবাই ভবন ত্যাগ করেন।
শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করার বিষয় নিয়ে ঢাকা জেলা উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্ ও ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ হেল কাফী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি আমাদের জানিয়েছেন তিনি অবরুদ্ধ । তিনি হামলার শঙ্কায় রয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে ক্যম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
সমন্বয়ক আহসান লাবিব বলেন, ভিসি নুরুল আমাদের উপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে ভিতরে বসে বসে মোরগ পোলাও খাচ্ছিলো। কতটা নির্লজ্জ হতে পারে এই ভিসি? আমাদের উপর হামলার দায়ে তার বিচার চাই।
এ বিষয়ে ভিসি নুরুল আলম ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগ দুই দফায় হামলা চালায়। পরের দিন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার জন্য জরুরী সিন্ডিকেট ডাকে। শিক্ষার্থীরা হল খোলা রাখার দাবি জানান। পরে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষনা দিলে বিক্ষব্ধ শিক্ষার্থীরা নতুন প্রশাসনিক ভবনে নিচতলা ভাংচুর চালায় ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। তবে সমন্বয়করা দাবি করেন, ছাত্রলীগ পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য তাদের অনুসারিদের দিয়ে এই ভাংচুর চালিয়েছে।
এসএস/
মন্তব্য করুন