বাকৃবি প্রতিনিধি: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ইতোমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকটি ব্যাচ, অনুষদ ও হলের শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করেছেন। তাদের মধ্যে বিগত সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত অনেক শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতা থাকাকালীন বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী নির্যাতন, হলের ডাইনিংয়ের অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অসহযোগীতাসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত অনেকেই খোলস পাল্টে সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে ক্যাম্পাসে আধিপত্য ধরে রাখতে চাচ্ছেন। আবার ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিত কর্মীরাও হচ্ছেন সক্রিয়।
এমন সময়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে সমালোচনা। তার নিজের করা ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের ফারহাদ ফাহিম নামের এক শিক্ষার্থী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি পোড়াচ্ছেন। এটি দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার দিকে নানা অভিযোগের তীর ছুড়ছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সে কেমন করে এটি করতে পারে সে প্রশ্ন করেছেন অনেকে।
হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফারহাদ ফাহিম প্রথম থেকেই ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। মিছিল, মিটিংয়েও ছিলেন সক্রিয়। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতি করেও পদবঞ্চিত হওয়ায় আক্রোশে এমনটা করেছেন। আবার নিজের কোটা থাকায় ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং এই ২৪ এর কোটা আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের যেতে বাধা প্রদান করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন অনেকে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের জন্য তিনি সোচ্চার হলেও ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাথে রাজনীতিতে যোগ দিতে চান বলেও অভিযোগ করেন হলের শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে তিনি হলে এসে ব্যক্তিগত আক্রোশ মিটাতে ছাত্রলীগের পদপ্রাপ্ত নেতাদের রুমের তালা ভেঙে সেই রুমে কি কি ছিলো সেগুলে তুলে ধরছেন ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে এবং তাদের সার্টিফিকেটও নিজের কাছে নিয়ে রাখছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ফারহাদ ফাহিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার পরিবার বিএনপি মতাদর্শের। বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের আধিপত্য ও চাপের জন্য ছাত্রলীগের কিছু কর্মসূচিতে যোগদান করেছি।
তবে আমি ছাত্রলীগের কোন পর্যায়ে পদের জন্য আবেদন করিনি। বরং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছি।
ছবি পোড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের ওপর সারা দেশের মানুষের আক্রোশ, আমার হয়তো একটু বেশি। এজন্য এমনটা করেছি।
ছাত্রদলের রাজনীতিতে যোগ দেয়ার বিষয়টি তিনি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, আমি বিএনপি, ছাত্রদলকে সমর্থন করে যাবো, কিন্তু সরাসরি রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছে নেই।
এসএস/
মন্তব্য করুন