এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রের থাকা এক ৬০ বছরের বৃদ্ধা আঙ্কুরের নেছা জানিয়েছেন আমরা এই আশ্রয়কেন্দ্রে সঠিকভাবে কোনো খাবার পাচ্ছি না। গত বৃহস্পতিবার সকালে এ আশ্রয় কেন্দ্রে আমি আমার পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। মাঝে মধ্যে কিছু খাবার পাচ্ছি। অনেক সময় রাতে উপবাস থাকতে হচ্ছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে আমাদের কিছু মুড়ি আর গুড় দিয়ে যাওয়া হয়। সকালে কোনো খাবার দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে সামান্য খিচুড়ি খেয়েছি।
এদিন সরেজমিন আশ্রয়কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায়, চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বানবাসী মানুষ। দুইদিনে পাচ্ছেন একবেলার খাবার। খাদ্যের জন্য মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে হাহাকার। আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষের অভিযোগ, আমাদের খবর কেউ রাখছেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দগ্রামে ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের বানবাসী মানুষের জন্য ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। তাদের অভিযোগ, সরকার বা বেসরকারিভাবে তারা খাবার পাচ্ছে না। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে ঘুরে পাওয়া গেছে এমন চিত্র।
রিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, বন্যা আক্রান্ত হয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে এই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি। দুইদিনে একবেলার খাবার পাচ্ছি। কোলের মাসুম বাচ্চাদের খাবার দিতে না পারায় রাত-ভর কান্না কাটি করে।
খিরণশাল আলিম মাদ্রাসার আশ্রয়কেন্দ্রের এয়াছিন বলেন, উপজেলা সদর থেকে এ আশ্রয়কেন্দ্রেটি ভেতরে হওয়ায় এখানে কোনো ত্রাণসামগ্রী আসছে না। দুইদিন পর একবার শুকনো খাবার আসে। বৃহস্পতিবার এ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি ৬ সদস্য নিয়ে। আমরা খাবার সংকটে ভুগছি।
আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মিতল্লা গ্রামের ৬৫ বছর বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম বলেন, সর্বনাশা বন্যা আমার ঘর বাড়ি সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার থেকে এ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছি। ঠিকমতো কোনো খাবার পাচ্ছি না। দুইদিনে একবার এ কেন্দ্রে শুকনো খাবার আসে। অনেকটা অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
চৌদ্দগ্রাম ইউএনও রহমত উল্যাহ বলেন, চৌদ্দগ্রামে ত্রাণের সংকট রয়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এ সংকট মোকাবিলা করার। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খাবার পৌঁছানোর জন্য বিত্তশালীদের আহ্বান জানান তিনি।
এসএস/
মন্তব্য করুন