এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: বাতিল হতে পারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এ ধাপের পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত। আদালতের নির্দেশনা পেলে এ ধাপের পরীক্ষা বাতিল করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তদন্ত করেছি। প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এখন আদালত যে নির্দেশনা দেবে আমরা সেভাবেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, তৃতীয় ধাপের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগটি সেসময় গুরুত্ব সহকারে আমলে নেওয়া হয়নি। তৎকালীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে এমন আশঙ্কায় তদন্ত সেভাবে হয়নি। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে তার নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এ অবস্থায় আদালত নতুন করে তদন্তের নির্দেশনা দিলে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, তৃতীয় ধাপের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের যে তদন্ত হয়েছে তা সন্তোষজনক নয়। বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দরকার ছিল। একটি স্বাধীন কমিশন কিংবা সংস্থার অধীনে তদন্ত করার দরকার ছিল। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে এ পরীক্ষা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
পরীক্ষার সময়ই প্রশ্নফাঁস নিয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর ঢাবি শিক্ষার্থীসহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ‘প্রশ্নফাঁস চক্র’ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আসামিরা।
এ বিষয়ে তৎকালীন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশিদ বলেছিলেন, তৃতীয় ধাপের প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে রমনা থানায়ও মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত পরীক্ষার্থী হলেন মনীষ গাইন, পংকজ গাইন ও লাভলি মন্ডল। এই তিন জনকে আদালতে গত ২৫ এপ্রিল প্রশ্নপত্র ফাঁসে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যদিকে প্রশ্নপত্র সমাধানকারী ছিলেন দুই জন। একজন জ্যোতির্ময় গাইন ও অন্যজন সুজন চন্দ্র রায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশ্নফাঁসকারী চক্র স্বীকার করার কারণে প্রকাশিত পরীক্ষার ফল নিয়ে বিতর্ক উঠবে এটাই স্বাভাবিক। পরীক্ষার সময়ই যখন প্রশ্নফাঁস নিয়ে অভিযোগ ছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করা। প্রয়োজনে পরীক্ষা বাতিল করা। কিন্তু তারা তা করেনি।
এসএস/
মন্তব্য করুন