মোস্তাফিজুর রহমান রাফি, চবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশের অন্যতম স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। আবাসিক সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা – কর্মচারীদের চিকিৎসাসেবা গ্রহণের একমাত্র উপায় হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার। সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্টতা, সকল রোগের ওষুধের জন্য নাপা টেবলেট দেওয়া হয় বলে শিক্ষার্থীরা এই মেডিকেল সেন্টারকে ‘নাপা সেন্টার’ নামে অভিহিত করেন।
এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের শেষ নেই। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া,চিকিৎসকদের সময়মতো না আসা, জরুরি অনেক ওষুধের ঘাটতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই মেডিকেল সেন্টার। চিকিৎসাসেবায় গাফিলতির অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্রী নাঈমা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে নাঈমাকে চবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করলে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এক নম্বর গেট এলাকায় গেলে সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। চমেকে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এতে চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ করে সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা চবি মেডিকেলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় মেডিকেলের উন্নয়নে এই ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন, ওষুধ সরবরাহ ও অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বৃদ্ধি, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবি পেশ করেন তারা।
মেডিকেল সেন্টারের সেবার মান নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা তাদের হতাশা ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফখরুল হাসান এডুকেশন টাইমসকে বলেন, আমাদের চবি মেডিকেলে সেবার মান আশানুরূপ না। একদমই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ছাড়া তেমন কোন সেবা পাওয়া যায়না । একটু বড় কোন দুর্ঘটনা বা এক্সিডেন্ট হলে নিয়ে যেতে হয় চমেকে। সব রোগের ওষুধের জন্য একমাত্র নাপা ছাড়া তেমন কোন ওষুধ ও দেয় না। তাই আমার মতে এই সেবার মান আরও উন্নত করা উচিত। যেমন ওষুধ সরবরাহ বাড়াতে হবে, চিকিৎসার মান আরও উন্নত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো সমস্যার মধ্যে “মেডিকেল সমস্যা” হচ্ছে অন্যতম একটি সমস্যা। এখানে গত কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে। ডাক্তার সমস্যা পর্যবেক্ষণ করে নাপা ছাড়া তেমন কোন ভালো ঔষধ দেয়নি। তাই আমরা চাই এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক। মেডিকেল সেন্টারে সেবার মান আরও উন্নত করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি মেডিকেল সেন্টারের চীফ মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, মেডিকেল সেন্টারের সেবার মান এখন আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যে ১০ টি দাবি জানিয়েছিল সবগুলো দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এছাড়াও খুব দ্রুতই অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
আরএন/
মন্তব্য করুন