এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: দেশ নেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় না থাকায় নেই কোন সরকারী উদ্যোগ। তার পরেও থেমে নেই মুজিব প্রেমিরা। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের সাধারন মানুষ। এ মাধ্যমে শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে দেশে ফিরিয়ে আনার শপথ নেতাকর্মীদের।
এবার যেন এক ভিন্ন প্রেক্ষাপট। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বিগত বছরগুলোতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শ্রদ্ধা জানালেও এবার নেই তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে আওয়ামী সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষ শ্রদ্ধা জানায় জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগ, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া গোপালগঞ্জের পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও লাখো মুজিব ভক্ত শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদ প্রাঙ্গনে শোকসভা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারন সম্পাদক জি.এম সাহাবউদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার খায়ের, সাধারন সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুল, কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর এবারই রাষ্ট্রীয় ময্যদাবিহীন টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হলো। এর আগে প্রতিটি মৃত্যুবার্ষিকীতে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি। কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। শুধু টুঙ্গিপাড়া নয় জেলা জুড়ে নেয়া হয় নানা কর্মসূচী। শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক বিদেশে পাঠানোর প্রতিবাদে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা বন্ধ রাখে ব্যবসায়ীরা। জেলার প্রতিটি উপজেলায় ও ইউনিয়নে ইউনিয়নে আয়োজন করা হয় কাঙ্গলী ভোজের। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন।
শোকসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জি.এম আজম বলেন, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ যারা গণভবন ও ঢাকায় ছিলেন তাদেরকে সেনাক্যাম্পে নেয়া হয়। আপনারা দেখেছেন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সদরঘাট থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সেনাক্যাম্পের অফিসার্স ম্যাসে যাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছিলো তারা কোন পথে কিভাবে ওইখানে গেলেন।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশে হত্যা আর নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। তাই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এরজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এরআগে, সকাল সাড়ে ৭ টায় জেলা আওয়ামী লীগ কায্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এসএস/
মন্তব্য করুন