জাবি প্রতিনিধি: গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় হামলাকারী ও নেতৃত্বদানের অভিযোগে শামীম মোল্লাকে গণপিটুনি দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
ক্ষমতার দাপটে কাউকেই গুনতেন না তিনি। সবসময় কোমড়ে রিভলবার নিয়ে ঘুরতেন। চাঁদাবাজি, মাদককারবারী, জমি দখলসহ নানা অভিযোগের পাহাড় ছিল তার বিরুদ্ধে। ।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেইট এলাকা থেকে ক্যাম্পাসে নাশকতার সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে প্রক্টর অফিসের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা।
শামীমকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে প্রক্টরিয়াল টিম পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম শামীমকে ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় শামীম মোল্লা হামলার ঘটনায় নিজের অংশগ্রহণ ও ঘটনাস্থলে হামলাকারীদের সাথে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক মেহেদী ইকবাল উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করে।
শামীম মোল্লা জানায়, ১৫ জুলাই রাতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে হামলা করতে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪১তম ব্যাচের তারেক ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মিজান এই দুই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাকে বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে যায়। সেখানে ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেলের নেতৃত্ব পেট্রোল বোমা তৈরি করা হচ্ছিল এবং হামলার জন্য দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রস্তুত করা হচ্ছিল। প্রস্তুতি শেষে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা করতে যাওয়া হয়। হামলার সময় তারেক এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে বলে জানায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে শিক্ষার্থীরা আটক করে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয়। আমরা আশুলিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি টিম আসে। ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে পূর্বেও বেশ কয়েকটি মামলা আছে। তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এদিকে, সন্ধ্যা ৭টায় প্রক্টর অফিসে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তিনি উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন ও আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তার শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, সেদিনের হামলায় শিক্ষার্থীদের সাথে আমিও আহত হয়েছিলাম। আমরা প্রতিটি ঘটনার বিচার নিশ্চিতে কাজ করতে চাই। এতদিন প্রশাসন পূর্ণাঙ্গ ছিল না। আজ যেহেতু পূর্ণাঙ্গ হয়েছে শিগগিরই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিচার নিশ্চিতে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেবো।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধরে অসুস্থ হওয়ায় প্রাথমিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সুস্থ হলে তাকে পূর্বে রুজু হওয়া মামলায় চালান দেওয়া হবে।
এসআই/
মন্তব্য করুন