হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: সার্বজনীন এই পেনশন স্কীম বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষকদের পেটে ছুরি মারা হবে বলে দাবি করেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি।
সার্বজনীন পেনশন স্কীম বাতিল ও সুপার গ্রেড বহালের দাবিতে হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির এক সাধারণ সভায় এমন দাবি করা হয়। অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৫ মে) দুপুর আড়াইটায় অডিটোরিয়াম-২ এ উক্ত সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার সভাপিতত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মমিনুল ইসলাম ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সাদেকুর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ ও প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
সভায় সার্বজনীন পেনশন বাতিলে আগামী দিনের আন্দোলনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য উপস্থিত সাধারণ শিক্ষকদের মতামত গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষকদের গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়।
এ সময় সাধারণ শিক্ষকরা বলেন, সার্বজনীন এই পেনশন স্কীম বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষকদের পেটে ছুরি মারা হবে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা পেশা থেকে দূরে সরে যাবে তরুণরা। যেখানে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে যারা এই শিক্ষা দিয়ে দেশের জন্য সুনাগরিক তৈরি করে তাদের সাথে এই বৈষম্য মেনে নেয়া যায় না। আমরা চাই সার্বজনীন পেনশন স্কীম ব্যবস্থা বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চালু করা হোক। সার্বজনীন এই পেনশন বাতিলে আমরা সাধারণ শিক্ষকরা প্রয়োজনে কঠিন থেকে কঠিনতর আন্দোলনে নামতে রাজি আছি। বৈষম্যমূলক এই পেনশন নীতি আমরা মানি না।
এছাড়াও হাবিপ্রবি প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. বলরাম রায় বলেন, অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনে বলতে হচ্ছে, সার্বজনীন পেনশন স্কীমের যে, প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে সেটি জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হবে। যদিও একটি প্রজ্ঞাপনে লেখা আছে যে, জুলাই মাস থেকে যারা নিয়োগ প্রাপ্ত হবে তারা এই পেনশনের আওতাভুক্ত হবে। কিন্তু আসলে এটি হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক যখন অধ্যাপক হয় তখন সে গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-২ এ যাবে আবার গ্রেড-২ থেকে গ্রেড- ১ এ যাবে আর প্রতিবারই একটি করে নতুন নিয়োগপত্র পায় কাজেই এটি সবার জন্য প্রযোজ্য। কাজেই আমাদের সকলকে এই সার্বজনীন পেনশন নীতি প্রতিহত করতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাদেকুর রহমান বলেন, শিক্ষক বান্ধব নীতি না থাকায় বর্তমানে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আসা নিয়ে অনিহা দেখাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে, স্মার্ট শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠায় শিক্ষক বান্ধব পরিবেশ, নিয়মনীতি হওয়া প্রয়োজন।
সভার সমাপনী বক্তব্যে সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, আজকে এখানে উপস্থিত সকল শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে আমরা হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি আজকের এই সাধারণ সভার মাধ্যমে সার্বজনীন পেনশন স্কীম প্রত্যাখ্যান করছি। পাশাপাশি শিক্ষক সমিতির গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা একাত্মতা প্রকাশ করছি এবং তারই ধারাবিহকতায় আমরা আগামী ৭ মে সকাল ১১টায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে মৌন মিছিল করবো। এছাড়াও আমরা শিক্ষকদের সুপার গ্রেডের বিষয়ও আন্দোলনে সম্পৃক্ত করবো।
পরবর্তীতে আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিনে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মানবন্ধনের আয়োজন করবো। তারপরও দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে আমরা আবার সাধারণ সভা আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিবো।
এসআই/
মন্তব্য করুন