এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: ‘ভালা শরীলে মিছিলে গিয়া লাশ অইয়া ফিরল আমার আদরের বড় পুত। এহন আমারে কে মা বইলা ডাকব? কী দোষ আমার পোলার? কেন অ্যামনে পাখির মতো গুলি কইরা আমার পুতেরে মারা অইল? তারে নিয়া অনেক আশা আছিল। সংসারের হালও ধরছিল সে। এহন সংসারের কী অইব? পুত ছাড়া আমি ক্যামনে বাঁচুম?’ হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে নিজের ঘরে বসে গতকাল শনিবার দুপুরে এসব কথা বলেন পারভীন বেগম। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে নিহত তরুণ রাব্বি আলমের (২৩) মা।
পারভীন বেগমের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ নওগাঁও গ্রামে। গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকার পল্টন এলাকায় মিছিলে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাব্বি আলম। ২০ জুলাই গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
গতকাল দুপুরে মতলব দক্ষিণের নওগাঁও গ্রামে নিহত রাব্বির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর মা পারভীন বেগম আহাজারি করছেন। আশপাশের লোকজন এসে রাব্বির কথা স্মরণ করতে করতে নীরবে চোখের জল মুছছেন। ছেলের নানা স্মৃতির কথা বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন মা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে পারভীন বেগম বলেন, ‘রাব্বি ছিল আমার বহুত আউশের (আদরের) বড় পুত। খুব ভালা ও ভদ্র ছিল সে। ভাইবোনদের সঙ্গে খুব খাতির আছিল আমার পুতের। সবার সঙ্গে মিইশা চলত। এক গুলিতেই আমার পুত শেষ। কী দোষ করছিল সে? দেশের লইগা আন্দোলনে গেছিল। ফিরা আইল লাশ অইয়া। পুত হারানোর কষ্টের কথা ক্যামনে বুঝামু? পুতের টেয়াই সংসার চলত। ওর বাবা বৃদ্ধ। তেমন কাজ পারে না। সংসারডা এহন চালাইব কে? তয়, আমার পুতেরে যারা গুলি কইরা মারছে, তাগো বিচার চাই। বিচার পাইলে কইলজাডা একটু শান্তি পাইব।’
এসএস/
মন্তব্য করুন