কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ নামকরণ করার জন্য প্রাধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন ঐ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আবেদন পত্রটিতে স্বাক্ষর করেছেন শেখ হাসিনা হলের ১৬১ জন আবাসিক শিক্ষার্থী। সোমবার (০৪ নভেম্বর) হলের নাম পরিবর্তন পক্ষে হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর এই আবেদন পত্রটি জমা দেয় শিক্ষার্থীরা।
হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর দেয়া আবেদন পত্রে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, গত জুলাইয়ের স্বৈরাচারী সরকারের নির্বিচারে হামলা, গুলিবর্ষণ ও হত্যার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনার কারণে আমরা হলটির নাম পরিবর্তন করে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মতানুসারে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ করার আবেদন জানাচ্ছি। বর্তমান নামটি আমাদের ৫ই আগস্ট এর মতাদর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এধরনের স্বৈরাচার শাসকের নামের সাথে সংযুক্ত করা হলে এর নিরপেক্ষতা ও বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতায় প্রভাব পড়তে পারে।
আমরা বিশ্বাস করি, একটি হলের নামকে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক বা শিক্ষাবান্ধব প্রতীকী দিকের ভিত্তিতে রাখা হলে তা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং তাদের মধ্যে ঐক্য ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সহায়তা করবে। একইসাথে, শেখ হাসিনার মুর্যাল অপসারণের জন্যও আবেদন জানাচ্ছি যাতে হলের পরিবেশ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকে। ইতিমধ্যে এলাকাবাসী এটি নিয়ে বারবার আমাদের জানিয়েছেন আমরা এটি অপসারণ না করলে তারা নিজেরা হলে ঢুকে এটি অপসারণের ব্যবস্থা নিবেন। ফলে আবাসিক নারী শিক্ষার্থী রা এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছেন।
শেখ হাসিনা হলের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিমা আক্তার বলেন, ” আমাদের অসংখ্য ভাই-বোনের ত্যাগে আমরা, আমাদের দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। স্বৈরাচারের নামে একটা হল হতে পারে না, তার কোনো চিহ্ন ও থাকা আমাদের জন্য অসহনীয় তাই আমরা হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল করার জন্য আবেদন দিয়েছি। কেননা সুনীতি ও শান্তি দুজন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তবে পরবর্তী সময়ে তাদের সম্মাননায় কিছু করা হয়নি। তাই এই হলের নাম তাদের নামে করে আমরা তাদের সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি। আর স্বৈরাচাররের ছবির যে মুর্যাল সেটাও সরানোর জন্য দাবি জানিয়েছি আমরা। আশা করি প্রশাসন দ্রুতই ব্যবস্থা নিবে। ”
শেখ হাসিনা হলের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারিয়া রিমি বলেন, ‘আমরা চাই না কোন রাজনৈতিক ব্যাক্তির নামে আমাদের হলের নাম হোক। প্রশাসনের নিকট দাবি জানাই দ্রুত যেনো এই নাম পরিবর্তন করে।’
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোসা: শাহিনুর বেগমকে ফোন করা হলে তিনি মুঠোফোনে এ বিষয় কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং বিভাগের অফিস রুমে দেখা করতে বলেন। পরবর্তীতে তার অফিস কক্ষে গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পুনরায় ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত ৪ই আগস্ট শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ রাখেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
এএকে/
মন্তব্য করুন