কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধি: কবি নজরুল কলেজ ও শিক্ষার্থীদের ভাঙচুর এবং হামলার হাত থেকে বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইরফান আহমেদ ফাহিমসহ আরও দুই ছাত্রনেতা।
গত ১৮ নভেম্বর ভুল চিকিৎসায় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত ডক্টর মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) এইচএসসি শিক্ষার্থী অভিজিত হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতাল ঘেরাও করা বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কবি নজরুল কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টার পর ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালের প্রধান ফটকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
এসময় কবি নজরুল সরকারি কলেজে ভাঙচুর করতে আসা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কথা বলতে এগিয়ে যান কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইরফান আহমেদ ফাহিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী হাসান ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রুপ হোসাইন রাজ।
তারা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এবং তাদের বোঝাতে চেষ্টা করে পরীক্ষা দিতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ তাদের উপর হামলার সাথে জড়িত নয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কথা বলায় কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশংসা ভাসছেন এই তিন এই ছাত্রনেতা।
এবিষয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ওবায়দুর রহমান বলেন, কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইরফান আহমেদ ফাহিম কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশে প্রথম থেকেই ছিলেন।
তিনি বলেন, কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইরফান আহমেদ ফাহিম শিক্ষার্থীরা যেন কোনভাবেই সহিংসতায় না জড়ায় তার জন্য বার বার উদ্যোগ নিয়েছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের কবি নজরুল কলেজের উপর হামলা না করে তার চেষ্টা করেছিলেন। আজও যেন কোন শিক্ষার্থী ড.মাহবুব রহমান কলেজে হামলা না চালায় সে জন্য দুই কলেজের অধ্যক্ষকে নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের আটকানো চেষ্টা করেন।
এদিকে আরেক শিক্ষার্থী শাকিল মিয়া বলেন, আমাদের কলেজের উপর যখন হামলা করতে আসে ডিএমআরসিসহ অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর হামলা করতে আসে তখন বৈষম্য বিরোধীছাত্র আন্দোলন, কবি নজরুল সরকারি কলেজের সমন্বয়ক মেহেদী হাসান কলেজ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এমন সাহস আমাদের আর কোনো নেতা বা শিক্ষার্থী দেখায়নি।
এবিষয়ে ছাত্রনেতা ইরফান আহমেদ ফাহিম বলেন, আমি আমার সকল শিক্ষার্থী বন্ধুদের পাশে ছিলাম। আমি চেষ্টা করেছি কোনো রকম ভুল বোঝাবুঝির কারণে কোনো পক্ষের যেন ক্ষয়ক্ষতি না হয়। আমার দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আমাকে এই নৈতিক শিক্ষাটুকু দিয়েছে বলেই আমি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মাঝে গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তারপরও কিছু কিছু অতি উৎসাহী শিক্ষার্থী কলেজে হামলা চালিয়েছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদ কবি নজরুল কলেজর সভাপতি রুপ মিয়া রাজ বলেন, বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থী আমার ভাই ও বন্ধু। প্রথমত এই অধিকার বোধ নিয়েই তাদের সাথে কথা বলতে যাই। তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করি এই কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের কোন দ্বন্দ্ব নেই। আমি সহ আরও দুই জন ছাত্রনেতা তাদের আশ্বাস দেই তারা তাদের বন্ধুর মৃত্যুর বিচার পাবে।এতে করে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। তবে অতিউৎসাহী কিছু শিক্ষার্থী আমাদের কলেজের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান বলেন, আমি সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে যাই। তাদের অভিযোগ শুনি এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি এই কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তারা অনেকে বিষয়টি অনুধাবন করেছে, কিন্তু অতি উৎসাহী কিছু শিক্ষার্থী কলেজের ভবনের গ্লাস ঢিল মেরে ভেঙে ফেলে। সেই সাথে গেট ভাঙ্গার চেষ্টা করে।
এসআই/
মন্তব্য করুন