শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকরা। তাদের সাথে একই দাবি নিয়ে গত ১ জুলাই থেকে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি বর্তমান সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে মাঠে আছে শিক্ষার্থীরাও । এতে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলেই দাবি আদায়ে সরব রয়েছে আন্দোলনের মাঠে। এসব লাগাতার আন্দোলনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিকসহ সকল কার্যক্রমে চলছে অচলাবস্থা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে র্যালি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এদিকে কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শাবিপ্রবি মূল ফটকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন দাবি না মেনে নিলে আরো কঠোর কর্মসূচি দিবেন তারা।
কোটা বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ‘মেধা যার মেধা যার, চাকরি তার চাকরি তার; কোটা না মেধা, মেধা মেধা; সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; ৭১’এর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; সংবিধানের মূলকথা, সুযোগের সমতা; ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই; ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই ইত্যাদি নানান স্লোগান দিতে শোনা যায়।
শাবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ যদি কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়, মেধাবী শিক্ষার্থীরা কি করবে? আজ আপিল বিভাগ সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছে। এমনকি পরবর্তী সিদ্ধান্ত কখন কখন দিবে, তারও সুনির্দিষ্ট ডেট দেয়নি। শিক্ষার্থীদের পক্ষে এমন অবহেলা এবং বৈষম্য মেনে নেওয়া সম্ভব না। তাই ২০১৮ সালে কোটা নিয়ে যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল তা বহাল রাখতে হবে। যতক্ষণ না ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল থাকছে এবং কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।
এদিকে সর্বজনীন পেনশন বাতিল নিয়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের মধ্যে শাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আহমদ মাহবুব ফেরদৌসী বলেন, এটি একটি বৈষম্যমূলক পেনশন ব্যবস্থা। দ্রুত সময়ে এ ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। না হয় আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের মেধা, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কর্মদক্ষতার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। এদতসত্ত্বেও শিক্ষকরা বিভিন্ন সময়ে নানা রকমের হয়রানি ও ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন। প্রত্যয় নামক সর্বজনীন পেনশন স্কিম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে চরম বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।
এসআই/
মন্তব্য করুন