যবিপ্রবি প্রতিনিধি :
সারাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময় তাঁরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কোটা প্রথা সংস্কার করে দেশের মেধাবী সন্তানদের যোগ্য স্থানে বসতে দেওয়ার দাবি জানান।
সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১২ টায় যশোর শহরের পালবাড়ি থেকে মিছিল শুরু করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে যশোর প্রেসক্লাবের সম্মুখ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় জেলা সার্কিট হাউস সড়ক ও মুজিব সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, এই ৫৬% কোটার মাধ্যমে দেশের মেধাবীদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অযোগ্য কোটাধারীদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসিয়ে দেশের উন্নতি কখনোই সম্ভব নয়। আজ দেশের মেধাবীরা তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না পেয়ে ভিন দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। আমরা আমাদের দেশের মেধা বিক্রি করে দিচ্ছি এই কোটা প্রথার মাধ্যমে। যদি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চান তাহলে অবশ্যই কোটা প্রথা সংস্কার করে যোগ্য মেধাবীদের সুযোগ দিতে হবে। তাই আমরা চাই অবিলম্বে এই কোটা প্রথার সংস্কার হোক। আমরা ৫২ তে রক্ত দিয়েছি, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন করেছি এবং এই বাংলাদেশের প্রতি ধাপে ছাত্রসমাজ ভূমিকা রেখেছে। এবং এই ২৪ এ এসেও আমরা সফল হবো এটাই আমাদের বিশ্বাস।
এসময় শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা’, আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘আঠারোর পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন সম্মিলিত কণ্ঠে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত রবিবার (৭ জুলাই) বিকাল তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-চৌগাছা স্বাধীনতা সড়ক অবরোধ করে কোটা আন্দোলনকারী। এসময় তারা তাদের চার দফা দাবি পেশ করেন।
৪ দফা দাবিসমূহঃ
১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে
২। ১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্য মূলক কোটা বাদ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে।
৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূণ্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
৪। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রায় এক ঘণ্টা পর বিকাল ৪টার দিকে অবরোধ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সড়কে মিছিল করে তারা।
আরএন/
মন্তব্য করুন