রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। শুধুমাত্র এই ছয়জনই নন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে পিএসসির আরও পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম জড়িয়েছে।
তারা হলেন- পিএসসির পরিচালক এনামুল বশির, সহকারী পরিচালক আবদুর রউফ, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, অফিস সহায়ক ডন কুমার ও গাড়িচালক আতাউর রহমান। বিভিন্ন সময় ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন তারা।
পিএসসি সূত্রে জানা যায়, এই পাঁচজনকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে চাকরিচ্যুত করেছিল পিএসসি। পরবর্তীতে এনামুল বশির ও আবদুর রউফ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের মাধ্যমে চাকরি ফিরে পেয়েছিল। অন্যদিকে, অফিস সহায়ক ডন কুমার ও গাড়িচালক আতাউর রহমান চাকরিচ্যুত হন দুই বছর আগে। সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায় গত বছর অবসরে যান। অবসরে গিয়েও অনেকেই প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত হন।
২০১০ সালে আবদুর রউফের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। ঐ ঘটনার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পিএসসি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর প্রশ্নফাঁসের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৩ সালে আবদুর রউফকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে চাকরি ফিরে পান গত বছর। এরপর প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পরিচালক হন তিনি।
তবে আবদুর রউফের দাবি, সন্দেহবশত ২০১০ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি; কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় পরে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পিএসসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরি দেওয়ার নামে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইমরুল ইসলামের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়েছিলেন অফিস সহায়ক ডন কুমার। যে কারণে ২০২২ সালে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। তাঁর মামলা এখনো চলমান রয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে পিএসসির গাড়িচালক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধেও। দাপ্তরিক সূত্র বলছে, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সলিল বরণ দাসের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেন আতাউর। ২০২২ সালে এই ঘটনায় চাকরিচ্যুত করা হয় তাকে।
প্রসঙ্গত, ৫ জুলাই ১৭ জনকে রেলের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃতদের ছয়জনই পিএসসির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারী। এদের মধ্যে রয়েছেন- পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, কর্মচারী (ডেসপাচ রাইডার) মো. খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম এবং সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী।
ইএইচ/
মন্তব্য করুন