মোস্তাফিজুর রহমান রাফি: তথ্য প্রযুক্তির এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন স্মার্টফোন। বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত কল্পনা করতে পারি না। আজকাল তরুণরা স্মার্টফোনের অ্যালার্মে ঘুম থেকে জাগে আবার ঘুমাতে যায় স্মার্টফোন স্ক্রল করতে করতে। এই আসক্তির মাঝে ব্যয় হয়ে যায় তাদের মহামূল্যবান সময়।
আসক্তির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও টিকটকের মতো অ্যাপগুলোর অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার। এছাড়া ফ্রি ফায়ার কিংবা পাবজির মতো অনলাইন গেমগুলো তো আছেই।
একটা সময় তরুণদের পড়াশোনার পাশপাশি অবসর সময় কাটতো খেলাধুলা, ঘুরাফেরা, পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্পগুজব করে। কিন্তু বর্তমানে এর উল্টো পরিলক্ষিত হচ্ছে। স্মার্টফোনের নেশায় তারা সামাজিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নিজেদেরকে চার দেওয়ালের মাঝে আবদ্ধ করে নিচ্ছে। ফলস্বরূপ সম্মুখীন হতে হচ্ছে নানাবিধ সমস্যার। প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে হয়েছে লেখাপড়া থেকে বিচ্ছিন্নতা, কাজের প্রতি মনযোগ হারানো, বিষন্নতা, অনিদ্রা ও স্বাস্থ্যের অবনতি।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্য মতে, টানা দুই ঘণ্টা ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিনের দিখে তাকিয়ে থাকলে চোখের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরেকটি গবেষণা বলছে, মোবাইল ফোন থেকে নির্গত নন-আয়োনাইজিং রশ্মির প্রভাবে ব্রেইন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ব্যবহারকারী ও অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে সন্তানদের ফোন ব্যবহারের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে, যা বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরা করে থাকেন। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ব্রিটিশ দৈনিক দ্য মিররকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের খাবার টেবিলে সেলফোন থাকে না। অন্তত ১৪ বছর না হলে সন্তানদের হাতে ফোন তুলেও দিই না।’
এছাড়া আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে অবসর সময়ে পছন্দের বই পড়া, খেলাধুলা করা, শখের কাজ করতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। সমৃদ্ধ জাতি গঠনের ক্ষেত্রে তরুণরা সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। সেই তরুণদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে স্মার্টফোন আসক্তি দূর করা আবশ্যক।
লেখক: মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাফি, শিক্ষার্থী, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল : [email protected]
এসআই/
মন্তব্য করুন