এডুকেশন টাইমস
১৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে অস্থিরতা কেন?

রুমি নোমান: দেখুন দেশে বেশ কিছুদিন ধরে দেশের সরকারি উচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বোচ্চ অভিভাবক কিংবা তদারকি সংস্থাও সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষকরা তাদের দাবিতে কঠোর অবস্থানে আবার কোটার সংষ্কার নিয়ে মাঠে রয়েছেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। পাশাপাশি প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারি তো আছেই!

কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখুন তো, বেসরকারি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কী বন্ধ আছে? কোনো সেশন জট কিংবা ক্লাস-পরীক্ষায় বিঘ্নতা আছে? উত্তরটা না বোধক।

আবার আরেকটা বিষয় লক্ষ্য করুন, একটি বিশেষ সময়েই কিন্তু আন্দোলনগুলো চলমান। এই আন্দোলনগুলির তীব্রতার ঘোষণাও কিন্তু পূর্বে থেকেই অনুমেয় ছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিকট এ তথ্য থাকা স্বাভাবিক।

কিন্তু দীর্ঘদিনেও এসব সমাধানে তেমন কোনো ফলপ্রসু পদক্ষেপ নেই। নেই কোনো আলোচনা। উল্টো ইউজিসির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে নির্দেশনা দেওয় হয়েছে। অথচ এর আগে থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তারা দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন।

হঠাৎ দেখলাম ১৩ জুলাই সরকারি দলের সম্পাদকের নেতার সঙ্গে দাবির বিষয়ে তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষক নেতারা। কিন্তু গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে সেখানেও উপস্থিত ২-১ জন ব্যতিরেকে অন্যান্য শিক্ষক নেতারা কথা বলার তেমন সুযোগ পাননি। তবে সচেতন মহলের অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, তাহলে দাবিটা কার নিকট?

প্রেক্ষাপটের অন্যদিক হলো, আন্দোলন কি তবে কেউ জিইয়ে রাখতে চাচ্ছে? যদি সেটাই হয়, পক্ষটা কারা? সরকার নাকি অন্য কোনো পক্ষ?

প্রশ্নটা একারণেই যে, দুটো দাবিই সরকারের পক্ষ থেকে নিরসনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়গুলোর আশু সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ নেই। ইতিমধ্যেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের নতুন শিক্ষার্থীরা ক্লাস শুরুর আগেই সেশনজটে পড়েছেন। তেমনি প্রতিটি শিক্ষার্থীই ভুক্তভোগী। এক কথায় কার্যত অচল দেশের সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠগুলো।

এদিকে আপলি বিভাগে এ বিষয়ে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপিল বিভাগ প্রয়োজনে সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাই কোর্টের রায় সংশোধন কিংবা এ বিষয়টি নিয়ে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটিও করতে পারে।

অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের আগের সব কোটা পুনর্বহালের আদেশের পাশাপাশি প্রয়োজনে সংস্কারে সুযোগ দেওয়া হয় সরকারকে। তারপরও এ অস্থিরতা নিরসনের বদলে তা উসকে দেওয়া হচ্ছে বলেই প্রতিয়মান।

তবে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন হলেও শিক্ষকদের দাবি কিন্তু সরকারের হাতেই বিদ্যমান। এরই মাঝে সরকার প্রধান জানালেন তারা আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত হলে তারপর কথা বলবেন। তাহলে কি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও দীর্ঘদিন অচল থাকুক, এটাই চাওয়া হচ্ছে?

সবশেষে বলতে চাই, শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা কতটুকু সন্তোষজনক সেটা শিক্ষাবিদরা বিবেচনা করবেন। কিন্তু দিনের পর দিন এ অস্থিরতা শিক্ষার্থীদের তথা উচ্চ শিক্ষার ক্ষতি করছে সেটি কি কেবলই বিরোধীদের ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা? নাকি প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গে সমঝোতা কিংবা চুক্তি বিষয়ে স্মৃতির বিলোপ!

লেখা: রুমি নোমান

সাংবাদিক

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা

শীতের শুরুতেই জাবিতে নৈশপ্রহরীদের শীতবস্ত্র উপহার দিলো ছাত্রশিবির

ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে শাটল বাস সার্ভিস

‘জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ’

জাবিতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: দ্রুত বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল

‘রাজশাহীর সমন্বয়ককে’ হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে

প্রেসি‌ডেন্ট’স রোভার স্কাউ‌টের সংবর্ধনা পেলেন বাকৃবির র‌বিউল

পাবিপ্রবিতে চোর সন্দেহে এক যুবক আটক

জবিতে আন্তঃবিভাগীয় খেলায় মারামারির জেরে ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা দায়ের, তদন্ত কমিটি গঠন

১০

তিন শতা‌ধিক নেতাকর্মীকে ব‌হিষ্কার ও ৫ শতা‌ধিককে শোকজ: ছাত্রদল সম্পাদক

১১

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

১২

কুবিতে খেলায় মারামারির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

১৩

ছাত্রাবাসে উঠতে ছাত্রদলের বাধা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৭ শিক্ষার্থী আহত

১৪

কুবির সিন্ডিকেটে নতুন দুই মুখ

১৫

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা করবো: সিইসি নাসির

১৬

কুবির দুই হলের নাম পরিবর্তন ও এক হলের নতুন নামকরণ

১৭

বাকৃবিতে ডোপ টেস্ট বাধ‌্যতামূলক করা হ‌বে: বাকৃ‌বি উপাচার্য

১৮

২০২৫ সালে মাধ্যমিক স্কুলে ছুটি থাকবে ৭৬ দিন

১৯

১১ দফা দাবিতে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে তালা দিয়েছেন জাবি শিক্ষার্থীরা

২০